রুপান্তরঃ আব্বাস আলী। ঝিনাইদহ।
তথ্যসুত্রঃ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও চীন মঙ্গলবার সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সম্ভাব্য উত্থান প্রতিরোধ করতে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্যদের সুশৃঙ্খল, দায়িত্বশীল ও শর্তসাপেক্ষ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
সর্বশেষ আফগান পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার পর এই তিন দেশের সিনিয়র কর্মকর্তারা এ আহ্বান জানান।
চীন-আফগানিস্তান-পাকিস্তান ট্রাইলেটারাল ভাইস ফরেন মিনিস্টিার্স স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগের তৃতীয় রাউন্ডে যোগ দিয়েছিলেন চীনা উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী লো ঝাওহুই, আফগান উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিরওয়াজ নাব ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব সোহাইল মাহমুদ। ভার্চুয়াল বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আন্তঃআফগান সংলাপ শুরু হওয়ার আগ দিয়ে এই ত্রিপক্ষীয় ভার্চুয়াল বৈঠকটি হলো।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আফগান তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ হলো আন্তঃআফগান আলোচনা।
চুক্তিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যহারের কথা বলা হয়েছে। তবে এর বিনিময়ে তালেবান নিশ্চয়তা দিয়েছে যে তারা আল কায়েদার মতো কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপকে আফগান মাটি ব্যবহার করতে দেবে না।
তবে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো তাড়াহুড়া করে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যহার করতে পারেন। এতে করে দেশটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কার করা হচ্ছে।
এ কারণেই পাকিস্তান ও আফগানিস্তান চায় সুশৃঙ্খলভাবে মার্কিন প্রত্যাহার।
চ্যালেঞ্জটিকে সামনে রেখে তিন পক্ষ সন্ত্রাসপ্রতিরোধ ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করতে চায়। তারা ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ অবস্থান আশা করছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, তিন পক্ষ শান্তি ও সমন্বয় প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আফগান উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনে রাজি হয়েছে। এতে আফগান উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনে একটি সময়সূচি নির্ধারণ ও মর্যাদা ও সম্মানের সাথে তাদের বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের জন্য সমৃদ্ধ একটি রোডম্যাপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকার ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়।
যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সহযোগিতা নিয়েও তারা বিস্তারিত আলোচনা করে। এছাড়া তাদের আলোচনায় আফগান শান্তি ও সমন্বয় প্রক্রিয়া, ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়গুলোও উত্থাপিত হয়।
তিন পক্ষ চীন-আফগানিস্তান-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
আফগানিস্তানে বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে আন্তঃআফগান আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টিতে আফগান সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে পাকিস্তান ও চীন।
আফগান-নেতৃত্বাধীন, আফগান মালিকানাধীন শান্তি ও সমন্বয় প্রক্রিয়ার প্রতি চীন ও আফগানিস্তান সমর্থনও ব্যক্ত করে।
এছাড়া আফগানিস্তান ও পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে অব্যাহতভাবে কাজ করতেও রাজি হয়। তারা আফগানিস্তান-পাকিস্তান অ্যাকশন প্লান ফর পিস অ্যান্ড সলিডারিটি কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেয়। আর আফগানিস্তান-পাকিস্তান সম্পর্কে চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে।
তিন পক্ষ নমনীয় পন্থায় ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত বলেও জানায়। তারা চতুর্থ চীন-আফগাস্তিান-পাকিস্তান ফরেন মিনিস্টার্স ডায়ালগে এসব ব্যাপারে অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতেও রাজি হয়।