নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করতে সোয়া দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। ওয়াহিদা খানমের মাথায় আঘাতের কারণে খুলির হাড় ভেঙে সেটা মস্তিষ্কে ঢুকে গিয়েছিল।
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটি বের করা হয়েছে। ইউএনও ওয়াহিদাকে যারা আঘাত করেছেন তারা মনে ওয়াহিদার মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালের উপ-পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, অস্ত্রোপচারের সময় তার মাথায় দেখা যায় আট থেকে নয়টি আঘাতের চিহ্ন। সেগুলো পরিষ্কার করে সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ আঘাতের কারণে মস্তিষ্কের বিভিন্নস্থানে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল সেগুলোও পরিষ্কার করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. বদরুল জানান, ‘লোহা জাতীয় কোনো জিনিস দিয়ে ইউএনও ওয়াহিদা মাথায় এলোপাথারি আঘাত করা হয়েছে। যারা আঘাত করেছে তারা মনে করেছেন তার মৃত্যু হয়েছে। ওয়াহিদাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এ আঘাতগুলো করা হয়েছে। ’
তিনি জানান, ‘ইউএনও ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। তার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সব সদস্যই অস্ত্রোপচারের সময় উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন। এখন তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। তার দেহের এক পাশ অবশ হয়ে আছে। তবে আল্লাহ তাআলা তাকে সুস্থ করলে সেটা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। ’
অধ্যাপক ডা. বদরুল আরও জানান, ইউএনও ওয়াহিদার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫মিনিটের দিকে। অস্ত্রোপচার শেষে তাকে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আগের চেয়ে তার অবস্থা কিছুটা উন্নতি বলা যায়।
এর আগে রাত ৯টার দিকে অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার আগে ইউএনও ওয়াহিদার সিটি স্ক্যান করা হয়। রক্তচাপ পরীক্ষা করে তা স্বাভাবিক পাওয়ায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, দুর্বৃত্তের হামলায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথার বাম দিকটা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাথার কিছু অংশ ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চাপ তৈরি করেছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটি অপসারণ করা গেলে অবস্থার উন্নতি হবে এমন আশা থেকে তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।