পশু চিকিৎসক এক তরুণীকে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার দায়ে গ্রেফতারকৃত ধর্ষকদের জনতার হাতে তুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন ভারতের তেলেঙ্গানা প্রদেশের হাজার হাজার মানুষ। শনিবার প্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে শাদনগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তারা।
এর আগে, গত বুধবার রাতে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে তেলেঙ্গানার ওই তরুণী চিকিৎসককে চার ট্রাক চালক ও ক্লিনার কৌশলে নিজেদের ফাঁদে ফেলে গণধর্ষণ করে। পর দিন সকালে ওই তরুণীর আগুনে পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে তেলেঙ্গানা; প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশটির অন্যান্য প্রান্তেও।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, শনিবার সকালের দিকে শাদনগর থানা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিক্ষোভকারীরা। গ্রেফতারকৃত চার ধর্ষককে জনতার হাতে তুলে দেয়ার দাবিতে থানা ঘেরাও করে স্বতঃস্ফুর্ত বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা।
হায়দরাবাদ পুলিশ বলছে, ওই তরুণীর মরদেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়ায় মেডিক্যাল আলামত সংগ্রহ করা জটিল হয়ে পড়েছে। তবে মরদেহ থেকে তারা ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করতে কাজ করছেন।
ইতোমধ্যে রোমহর্ষক এই ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতারের পর ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে হায়দরাবাদ পুলিশ। বিক্ষোভকারী ও স্থানীয় রাজনীতিকদের দাবির মুখে দেশটির দ্রুত বিচার আইনে তাদের বিচার হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
পুলিশ বলছে, পশু চিকিৎসক ওই তরুণীকে বুধবার রাতে অপহরণের শিকার হয়। হায়দরাবাদের একটি টোল বুথের পাশে তার স্কুটার রেখে সহকর্মী এক চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। সেখান থেকে ফিরে নিজের স্কুটারটির চাকা পাংকার দেখতে পান। এ সময় সেখানে চারজন ট্রাকচালক আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। পরে সেখান থেকে তাদের একজন এসে চাকা ঠিক করে দেয়ার কথা বলে স্কুটারটি নিকটস্থ বাজারে নিয়ে যান।
পরে ওই তরুণী তার বোনকে ফোন করে জানান, স্কুটারটি পাংচার হয়ে গেছে। কয়েকজন ব্যক্তি সেটি ঠিক করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ওই তরুণীর বোন জানান, ফোনে কথা বলার সময় তার বোনকে ভীত-সন্ত্রস্ত মনে হচ্ছিল। বাসায় না ফেরায় তিনি আবারও ফোন দিলে তা বন্ধ পান।
পরে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ওই টোল বুথ থেকে একটু দূরে ওই তরুণীর পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কম্বলে মুড়িয়ে পেট্রোল ও ডিজেল ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল।