প্রফেসর ড. মুন্সী মুর্তজা আলী
(লোক প্রশাসন বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া)
কোন কোন বীর পুরুষ (কার্যত কাপুরুষ) বন্ধু মহলে গল্প ছাড়ে, তারা বউ এর কথা শোনেনা। এটা বলে সে বিশাল বাহাদুরী নিতে চায়। তাদের ভাব দেখলে মনে হয়, বউ এর কথা শুনলে তাদের জাত চলে যায়। খোঁজ নিয়ে দেখেন, এরাই বউ এর কথা বেশী শোনে। তাদের বাড়ির মাতব্বরী বউ এর হাতে। তার কোন কর্তৃত্ব নেই। আবার বাইরে এসে লম্বা লম্বা গল্প মারে। এদের লজ্জাও কম। লজ্জা কম বললেও ভুল হবে। এরা নির্লজ্জ।
যারা বউ এর কথা শোনেনা, তারাই এরকম গল্প করে বেড়ায় না। আর বউ এর কথা কেন শুনতে হবে না? আপনি বউ এর কথা শুনবেন না, আর বউ আপনার কথা শুনবে? এটি ভাবেন কি করে? আসলে বউ আপনার কথা শোনেনা। তাই বাইরে এসে তো আর বলতে পারবেন না, “বউ আপনার কথা শোনেনা!” তাহলে তো আপনার পুরুষত্ব থাকবে না। তাই উল্টোটা বলে বেড়ান।
বউ সঠিক কথা বললে শুনতে হবে। আর অন্যায় বললে সেটা শোনা যাবেনা। তবে বুঝিয়ে বলতে হয়। অনেক পুরুষ আছে বউ ভাল বললেও সেটা শুনতে চায়না। এটা তার পুরুষালীর নোংরা রুপ। আপনি ভেবে দেখেন তো, আপনার লেহ্য কথা বউ না শুনলে আপনার কেমন লাগে? পুরুষতন্ত্রে ভীষণ আঘাত লাগে। বউকে মারতে ইচ্ছে করে। তাহলে এবার ভাবুন বউ এর ভাল কথা আপনি না শুনলে বউ এর কেমন রাগ হয়? বউও তো মানুষ। সে যদি আপনাকে মেরে বসে? তখন কোথায় থাকবে আপনার পৌরুষ? অবশ্য আপনি যেভাবে গল্প করেন, আপনি বউ পেটান। কিন্তু আপনার সাথে যখন বউকে দেখি, তখন তো ভেজা বেড়ালের মত চুপ করে থাকেন। তখন মনেহয় আপনি বউকে পেটান, নাকি বউ আপনাকে পেটায়? আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
নিজেকে শুধরান। তারপর বউকে শুধরানোর চেষ্টা করেন। নইলে আপনার বউ কোন কথা না শুনতেও পারে। তাই বাইরে যেয়ে আলগা গালগল্প না করে, বউকে (মানুষ) মানবী ভাবতে থাকুন ও মানবিক হোন।
“উইমেনফোবিয়া” মানে নারীর প্রতি এ্যালার্জি মনোভাব অর্থাৎ নারীকে বিরোধীতা করার প্রবণতা বাদ দিন। এটা এক ধরনের দোষ ও মানষিক রোগ। এটা করলে দেখবেন, আপনার অনেক সমস্যা দূর হয়ে গেছে। বউ আপনার কথা শুনছে। আপনিও বউ এর সাথে সবকিছু শেয়ার করছেন। এটাই ভালবাসা। অপরের সমান অধিকার দেয়াই মানবিকতা। পুরুষ হবার আগে মানবিক হোন।
বউ এর সাথে রাজনীতি করতে হয়না। কারন বউ জনগণ নয়। বউ হলো বন্ধু। যদিও জনগণকে আপনার বন্ধু ভাবা উচিত ছিল!