Monday , December 2 2024
You are here: Home / Uncategorized / পাহারা দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না পেঁয়াজ!

পাহারা দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না পেঁয়াজ!

সারা রাত পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না চাষিদের। বগুড়ার সোনাতলা ও রাজবাড়ীর কালুখালীতে রাতের আঁধারে ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির ঘটনা ঘটেছে।

বগুড়ার সোনাতলার জোড়গাছা ইউনিয়নে রাতভর ক্ষেত পাহারা দেয়ার পর ভোরে কৃষক ঘরে ঘুমাতে গেলে এই চুরির ঘটনা ঘটে। চুরি যাওয়া পেঁয়াজগুলো দুই দিন পরই হাঁটে তোলা হতো।

স্থানীয়রা জানায়, গতকাল বুধবার ভোরে চোরের দল জোড়গাছা ইউনিয়নের মধ্য দীঘলকান্দি গ্রামের কৃষক ইয়াছিন বেপারীর দুই শতাংশ জমির পেঁয়াজ চুরি করে নিয়ে যায়। কৃষক ইয়াছিন জানান, তিনি মাঠে চার শতাংশ জমিতে এবার পেঁয়াজ লাগিয়েছিলেন। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে দুই শতাংশ জমি থেকে পেঁয়াজ হাটে বিক্রি করেছিলেন ১৫ হাজার টাকায়। বাকি দুই শতাংশ জমির পেঁয়াজ দুই দিন পর বিক্রি করার কথা। পেঁয়াজের দাম একটু বেশি হওয়ার কারণে বেপারীরা ১৮ হাজার টাকা দাম দিতে চেয়েছিলেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর বলেন, ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির বিষয়টি শুনেছি। পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় চোরেরা ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।

সোনাতলা থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মাসউদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করলে তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।

এদিকে রাজবাড়ীতেও রাতের আঁধারে ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরি গেছে। কালুখালীর মাঝবাড়ি ইউনিয়নের খামারবাড়ি গ্রামের কৃষক জোনাব আলীর ক্ষেত থেকে চুরি হয় প্রায় ১০ শতাংশ জমির পেঁয়াজ। এর পর থেকে অনেক চাষিই ক্ষেতে থাকা পেঁয়াজ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। সবাই রাত জেগে ক্ষেত পাহারা দিতে শুরু করেছেন। অনেকে আবার অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে নিয়ে যাচ্ছেন বাজারে।

খামারবাড়ি গ্রামের নতুন পারা গ্রামের কিষানি আমেনা বেগম বলেন, ‘এ বছর চোর আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারছি না। স্বামী আর স্ত্রী দুজনে মিলে বারবার ঘুম থেকে উঠে পেঁয়াজক্ষেত দেখে আসি। অনেক সময় জানালা দিয়ে টর্চলাইট জ্বালিয়েও পাহারা দিচ্ছি।’

আরেক কৃষক খায়রুল ইসলাম মিয়া বলেন, ‘আমরা পাঁচ কৃষক মিলে পেঁয়াজের চুরি ঠেকাতে ক্ষেতের মধ্যে টং ঘর তুলেছি। সবাই লাঠি ও টর্চলাইট জ্বালিয়ে সারা রাত বসে পাহারা দিই। আর এক সপ্তাহ পাহারা দিলেই পুরোপুরি পেঁয়াজ তোলা যাবে। যারা আগে ভাগে লাগিয়েছিল তারা এখন পেঁয়াজ তুলতে পারছে।’

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোপাল কৃঞ্চ দাস জানান, জেলায় ২৮ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৪১৫০ হেক্টর মুড়ি কাটা পেঁয়াজ। রাজবাড়ীতে এ বছর তিন লাখ ১১ হাজার ৬৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রাজবাড়ীর জমি পেঁয়াজ চাষের উপযোগী। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে বালিয়াকান্দি, কালুখালী ও পাংশায় বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের বিশেষ প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!