তরকারী বা বিভিন্ন স্বাদের খাবার রান্নার কাজে পিয়াঁজ অপরিহার্য সবজি মসলা। কিন্তু সেই পিয়াঁজ এখন সর্বসাধারণের ক্রয়সীমার বাইরে। পিয়াঁজের ঝাঁজে সবাই এখন দিশেহারা অবস্থায় রয়েছেন। অনেকে আবার তরকারীতে পিয়াঁজ দেওয়াও বন্ধ করেছেন। তবে পিয়াঁজ কৃষকদের একটি অর্থকরী ফসল হওয়ায় পিয়াঁজ চাষ করে বছরের অর্থনৈতিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন কৃষকরা। তাই বেশী দাম পাওয়ায় কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার কৃষকরা অপরিপক্ক মুলকাটা বা মুড়িকাটা পিয়াঁজ উত্তোলন করে ঢাকাসহ স্থানীয় বাজারে বাজারজাতকরনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়ায় ১১,২৫০ (এগার হাজার দুইশত পঞ্চাশ) হেক্টর জমিতে পিয়াঁজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আগামজাতের মুলকাটা পিয়াঁজ চাষ হয়েছে দৌলতপুরে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও বেশী দাম পাওয়ার আশায় এবছর দৌলতপুরে পিয়াঁজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। আরও কয়েদিন পরেই স্বপ্নের সোনালী সবজি ফসল পরিপক্ক পিয়াঁজ ঘরে তুলার কথা থাকলেও বাড়তি লাভের আশায় কৃষকরা অপরিপক্ক পিয়াঁজ উত্তোলন করে তা বিক্রয় করে খরচের তিনগুন মূল্যে বিক্রয় করছেন। তবে এবছর বীজের দাম বেশী হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে পিয়াঁজ চাষে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কোনক্ষেত্রে আরও বেশী। দ্বিগুনের চেয়েও বেশী দামে বিক্রি হবে এমন স্বপ্নে বিভোর পিয়াঁজ চাষীরা। দৌলতপুরের সবজিখ্যাত শশীধরপুর গ্রামের সফল চাষী নাসির উদ্দিন জানান, এবছর পিয়াঁজের বীজের দাম বেশী হওয়ায় বিঘা প্রতি খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশী পড়েছে। সে ৩ বিঘা জমিতে মুলকাটা পিয়াজ চাষ করেছে। খরচ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়েছে। তবে একবিঘা জমির মুলকাটা অপরিপক্ক পিয়াঁজ উত্তোলন করে তা বিক্রয় করেছে ১লক্ষ ৮০হাজার টাকায়। পিয়াঁজের বর্তমান বাজার মূল্য থাকলে কোন পিয়াঁজ চাষী লোকসানে পড়বে না বলেও জানান তিনি। পিয়াঁজ চাষে কৃষকদের বীজ, সারসহ প্রয়োজীয় প্রনোদনা ও পরামর্শ দেওয়ায় পিয়াঁজ চাষ ভাল হয়েছে এবং ফলনও ভাল হবে এমন কথা জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা সজিব আল মারুফ। তিনি আরও জানিয়েছেন দৌলতপুর এবছর মুলকাটা পিয়াঁজ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আর কয়েকদিন পরেই তা বাজারে পাওয়া যাবে। তবে কৃষকদের উৎপাদিত পিয়াঁজ বাজারে আসলে পিয়াঁজের ঝাঁজও কমবে এবং পিয়াঁজ নিয়ে সর্বমহলের পিয়াঁজ নিয়ে জল্পনা কল্পনার অবসান হবে। আর এমনটাই মনে করেন এ অঞ্চলের কৃষকসহ সর্বসাধারণ।