Tuesday , February 11 2025
You are here: Home / অন্যান্য / ফরিদপুরে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনে অনৈতিক লেনদেন

ফরিদপুরে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনে অনৈতিক লেনদেন

ফরিদপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন কাজে খুঁটি প্রতিস্থাপনের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অফিস ম্যানেজের কথা বলে একাজ করছেন। এ ঘটনায় তারা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের নাম ভাঙিয়ে কেউ এঘটনা ঘটালে দায়ভার তারা নেবেন না।

ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, শতভাগ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পসহ মোট পাঁচটি প্রকল্পে জেলায় পল্লী বিদ্যুতের প্রায় পাঁচ হাজার ৫৯ কিলোমিটারের এই লাইন সম্প্রসারণ ও খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। এর মধ্যে দুটি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

বোয়ালমারী উপজেলার চিতারবাজার এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ইউআরআইডিএস প্রকল্পের আওতায় কাজ করছে মেসার্স মির্জা আবু বকর নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

বোয়ালমারীর দাদপুর ইউনিয়নের চিতারপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোহসিন মোল্যা অভিযোগ করেন, ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাক ও ফোরম্যান আল আমীন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর দিয়ে টানানো তার সরানোর জন্য ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। সেই টাকা না দেয়ায় তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সঞ্চালন লাইনের তার কেটে ঝুলিয়ে রাখেন। পরে বিদ্যুতের সংযোগ দিলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাঁচটি পাটের গুদামে আগুন লেগে যায়। এতে তার দোকান-ঘরসহ ভাড়াটিয়াদের এক কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়।

এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পল্লী বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে ঘটনার সঠিক তদন্ত করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পল্লী বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির করে প্রশাসন।

চিতারবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জামালউদ্দিন বলেন, ঘুষের টাকা না দেয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবেই এই আগুন লাগিয়েছে তারা। তিনি বলেন, ‘ওই বাজারের রাকিবুল ইসলাম বতু, আমিন বিশ্বাস, বাবুল বিশ্বাসহ অনেকের কাছের কাছ থেকে এই চক্রটি বিদ্যুতের পিলার স্থাপনের কথা বলে টাকা নিয়েছে।’

চিতারবাজার বণিক সমিতির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নামে এসব ঘুষের টাকা সংগ্রহ করা হয়। টাকা না দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ইচ্ছামতো বিদ্যুৎ পিলার স্থাপন করে চলে যায়। যে কারণে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী তাদের টাকা দিচ্ছে।’

ফরিদপুরের ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এবিএম মমতাজউদ্দিন চিতার বাজারের অগ্নিকাণ্ডে দেয়া প্রতিবেদনে বলেন, ‘ঠিকাদারের কাজের সময় অসতর্কতার কারণে তার ছেঁড়া অবস্থায় ছিল, পরে লাইন দিলে আগুন লাগে।’

এ ব্যাপারে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারবাইজার আব্দুর রাজ্জাকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এমনটি যে হচ্ছে না তা নয়। তবে এর সাথে লোকাল লোকেরাই বেশি জড়িত। তারা আমাদের সাইনবোর্ড করে এভাবে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।’

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংযোগ বা পিলার স্থাপনের জন্য এই অফিসকে কোনো টাকা দিতে হয় না। চিতারবাজারের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সপ্তাহখানের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারব বলে আশা করছি।’

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!