খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর)। এ উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে খুলনা মহানগরী। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এক ঝাঁক নবীণ-প্রবীণের তৎপরতায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে দলীয় শিবিরে। প্রার্থীদের ছবিসহ তোরণ, ব্যানার-পোস্টার এবং বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে মহানগরী।
জানা গেছে, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে দলের দুই ইউনিটের শীর্ষ পদে নতুন মুখ আসছে। বর্তমান নেতৃত্বের অনেকেই নতুন কমিটিতে থাকছেন না। জেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে সাবেক একজন এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে একজন অ্যাডভোকেটের নাম শোনা যাচ্ছে।
তবে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা গেছে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মধ্যে খুলনায় সম্মেলনে মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব গড়ে তোলা অনেকটাই চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অনেকেই।
মহানগর কমিটির বর্তমান সভাপতি নতুন কমিটিকে জায়গা করে নিচ্ছেন বলে শোনা গেলেও সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন একজনকে আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর সার্কিট হাউস মাঠে সম্মেলন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এবারই প্রথম মহানগর ও জেলা কমিটির সম্মেলন একসঙ্গে হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি এবং অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শেখ হেলাল উদ্দিন।
সম্মেলনকে ঘিরে নানা জল্পনা শুরু হলেও মহানগর কমিটির সভাপতি পদে এখনও অপ্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সভাপতি ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত হাফ ডজন প্রার্থী প্রথম থেকেই তৎপর। শেষ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ এ পদে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা এমডিএ বাবুল রানা।
প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যরা সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার দৌড়ে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন। এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। সম্মেলনে তালুকদার আবদুল খালেককে সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তার ১৯ মাস পর ৭১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে, জেলা কমিটিতেও আসছে নতুন মুখ। সভাপতি পদে আলোচনার শীর্ষে আছেন খুলনা-৬ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সোহরাব আলী সানা ও সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী। তাদের ব্যাপারে দলের হাইকমান্ডের সায় আছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে খুলনা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। তবে আজই সব জল্পনার অবসান হচ্ছে।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শেখ হারুনুর রশিদকে সভাপতি ও এসএম মোস্তফা রশিদী সুজাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটির গঠনের ১০ মাসের মাথায় ৭০ সদস্যের জেলা কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
মোস্তফা রশিদীর মৃত্যুর পর গাজী আবদুল হাদী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। তার মৃত্যুর পর অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পান।
সম্মেলন নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন বলেন, নুতন মুখও আসতে পারে আবার পুরনোরাও থাকতে পারে। তবে আমরা কাউন্সিলরদের ওপরই ভরসা রাখছি। তাদের মতামত প্রাধান্য পাবে।