Wednesday , March 19 2025
You are here: Home / জাতীয় / বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ

আজ ১০ ডিসেম্বর, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিনের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী। পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ৬ দিন আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে খুলনার রূপসায় শহীদ হন এ বীর মুক্তিযোদ্ধা। এ উপলক্ষে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দেশের মানুষ স্মরণ করছেন জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানকে।

১৯৩৪ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের বাগপাচড়া গ্রামে রুহুল আমিনের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের গোটা সময় তিনি জীবনবাজি রেখে লড়েছেন শত্রুদের বিরুদ্ধে। তার সম্মানে সরকার বাগপাচড়া গ্রামকে রুহুল আমিন নগর নামে নামকরণ করেন। এছাড়া এ বীরশ্রেষ্ঠের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে তার জন্মস্থানে ২০০৮ সালে শহীদ মো. রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর স্থাপন করা হয়।

কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে এ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর করা হয়েছে সেটি সঠিকভাবে তত্ত্ববধায়ন না করায় আস্তে আস্তে ম্লান হয়ে যাওয়ার পথে। স্থানীয়দের অভিযোগ নিয়মিত এ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর খোলা রাখা এবং পরিচর্যা করা হয় না। গ্রন্থাগারে নতুন বই সরবরাহ বন্ধের পাশাপাশি পত্রিকা দেয়া বন্ধ রয়েছে ছয় বছর যাবত।

BirSrestho-RuhulAmin

গত ৮ ডিসেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ধুলাবালিতে ভরা।

রুহুল আমিনের বাড়ির ছেলে সবুজ জানান, নিয়মিত বেতন না পাওয়া ও বেতন কম হওয়াতে গত এক বছর আগে কেয়ারটেকার আলাউদ্দিন চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। সে থেকে এটি বন্ধ। যদি কোনো দর্শনাথী আসেন তাহলে তারা বাড়ি থেকে চাবি নিয়ে গ্রন্থাগারের তালা খুলে দেন এবং পরে বন্ধ করে রাখেন। তাদের ক্ষোভ এটি যে উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছিল তা কার্যকর হচ্ছে না।

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নাতি সোহেল চৌধুরী জানান, নানা সমস্যায় জর্জরিত তার নানার নামের স্থাপনা। প্রশাসনকে বার বার জানানোর পরও তারা তেমন কোনো উদ্যোগ নেয় না।

এদিকে গ্রামের নাম রুহুল আমিন নগর করা হলেও রাস্তাঘাট ও তার নামে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানগুলোরও বেহাল অবস্থা। এ নিয়ে ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, রুহুল আমিনের নামে স্থাপিত মাদরাসা থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেউ কোনো দান-অনুদান দেয় না। সবার ধারণা এগুলো যেহেতু বীরশ্রেষ্ঠের নামে হয়েছে, তাই সরকার সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু আসলে তা ঠিক নয়। আগেই ভালো ছিল।

BirSrestho-RuhulAmin

এদিকে নৌবাহিনীর উদ্যোগে গত বছর রুহুল আমিনের ছোট ছেলে শওকত আলীর থাকার জন্য প্রায় ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি পাকা ভবন পুনঃ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। শওকত আলী জানান পাকা ভবনটি পুনঃ নির্মাণ করে দেয়ায় তারা খুশি। তবে, সরকারি ভাতা কম হওয়ায় বর্তমানে তার সংসার চলতে হিমশিম খেতে হয়।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন জাদুঘর ও গ্রন্থারের বিদ্যামান নানা সমস্যার কথা স্বীকার করে জানান, দ্রুততম সময়ে সেখানে নিয়মিত পত্রিকা সরবরাহ, সার্বক্ষণিক কেয়ারটেকার থাকার ব্যবস্থা করা হবে। ফোর লেনের কাজ শেষে হলে চৌমুহনী চৌরাস্তায় তার নামে স্কয়ারটি নতুন আঙ্গিকে আবার দৃষ্টিনন্দনভাবে তৈরি করা হবে।

তিনি আরও জানান, নৌবাহিনীর উদ্যোগে একটি ট্রাস্ট করার আলোচনা চলছে। ট্রাস্টের আওতায় এ জাদুঘর ও গ্রন্থাগার চললে কোনো সমস্যা হবে না।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!