জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ (বৃহস্পতিবার)। শুনানিতে খালেদা সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে বিএসএমএমইউ কতৃর্পক্ষ।
সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় আবেদনটি শুনানির জন্য ১২ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে বুধবার বিকেলে বিএসএমএমইউ থেকে খালেদা সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদনটি সিলগালা করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়।
এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট ও এর আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
গত ২৮ নভেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা থাকলেও সেদিন তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন চায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তা আদালতে আসার কথা ছিল।
তবে নির্ধারিত দিনে সেটি আদালতে না আসায় খালেদার জামিন প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত এক সপ্তাহ পিছিয়ে যায়। প্রধান বিচারপতি সেদিন ১২ ডিসেম্বর শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখে তার আগেই প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে তার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন দাখিল না করা নিয়ে ব্যাপক হৈ চৈ করেন দলটির আইনজীবীরা। একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতিসহ ৬ জন বিচারক এজলাস ছেড়ে উঠে যান।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে ওই সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে জামিনের আবেদন করেন খালেদা জিয়া। তবে সেই আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।
২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।