শুরুর আগে ও পরে দর্শক উৎসাহ-উদ্দীপনায় কমতি ছিলো। প্রথম দিন খেলা দেখতে এসেছিলেন অল্প কিছু সংখ্যক ক্রিকেট অনুরাগি। সংখ্যায় যত কমই হোক, যারা এসেছিলেন তারা একদম হতাশ হননি। ফল যাই হোক, যেই জিতুক- মিলেছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মূল আস্বাদন।
প্রথম ম্যাচে মোহাম্মদ মিঠুন ও ইমরুল কায়েস এবং রাতের ম্যাচে দাসুন শানাকার ফ্রি স্ট্রোক প্লে ও বাহারি চার-ছক্কার ফুলঝুরি দেখে খুশি ক্রিকেট অনুরাগিরা। সেই সাথে উইকেট নিয়ে যে সংশয় ছিলো তাও কেটে গেছে অনেকটা।
আগের যেকোনো আসরের প্রথম দিনের তুলনায় গতকালের (মঙ্গলবার) শেরে বাংলার উইকেট ছিলো অনেকটাই ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি। এখন বাকি ম্যাচগুলোয় অমন উইকেট থাকলেই ভালো। ব্যাটিং দেখে মন ভরলেও প্রথম দিন ছিলো বড় তারকার আকাল।
তবে আজ আসরের দ্বিতীয় দিনে দেখা মিলবে এক ঝাঁক নামী তারার। মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, শহীদ আফ্রিদি, আন্দ্রে রাসেল, শোয়েব মালিকরা নামবেন দিনের প্রথম ম্যাচেই। আজ দুপুর দেড়টায় দেশসেরা অধিনায়ক মাশরাফির ঢাকা প্লাটুন ও ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী রয়্যালস।
প্রায় ছয় মাস (৫ মাস ৭ দিন) পর প্রথমবারের মতো মাঠে নামতে যাচ্ছেন মাশরাফি। সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি তিনি। নড়াইল এক্সপ্রেস এবার ঢাকা প্লাটুনের অধিনায়ক। তার সঙ্গে আছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল, পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি, এনামুল হক বিজয়, মুমিনুল হকসহ চেনা মুখরা।
অন্যদিকে এবারই প্রথমবারের মতো বিপিএলে অধিনায়কত্ব করতে যাচ্ছেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার রাসেল। বিপিএলের বেশ কয়েকটি আসরে খেললেও আগে কখনও অধিনায়কত্ব করেননি তিনি। তার দলের আছেন লিটন দাস, আফিফ হোসেন ধ্রুব, তাইজুল ইসলাম, শোয়েব মালিকরা।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বিপিএলের ইতিহাসে সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। টুর্নামেন্টের প্রথম দুই আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস, তৃতীয় আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস এবং পঞ্চম আসরে তিনি শিরোপা জিতিয়েছেন রংপুর রাইডার্সকে। এবার মালিকানা বদলে গেলেও, মাশরাফি আবার ফিরেছেন ঢাকায়। এখানেও তার সাফল্য যাত্রা অব্যাহত থাকে কি না সেটিই এখন দেখার!
বিশ্বকাপে চিরচেনা মাশরাফির দেখা মেলেনি। তার ভক্ত-সমর্থকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন পছন্দের তারকাকে মাঠে দেখতে। কী করেন মাশরাফি? আবারও নিজেকে ফিরে পাবেন? নাকি বিশ্বকাপের সেই অনুজ্জল মাশরাফির দেখা মিলবে বিপিএলে? এ প্রশ্ন উঠছে বারবার। তবে ভেতরের খবর, মাশরাফি নিজেকে ফিরে পেতে ও ভালো করতে মুখিয়ে আছেন।
বারবার প্রতিকূলতাকে জয় করা এ অদম্য সাহসী ও প্রচণ্ড মানসিক শক্তির অধিকারী ক্রিকেটার বিপিএলের আগে ঘাম ঝরিয়েছেন, ওজন কমিয়েছেন, শরীরের বাড়তি মেদ ঝেরে ফেলে আবার নিজেকে শারীরিকভাবে তৈরি করেছেন বল হাতে ছন্দ ফিরে পেতে। ইতিহাস-পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বিপিএল যে তার ছন্দ ফিরে পাওয়ার ‘পয়মন্ত’ আসর।
বিপিএলের সবশেষ আসরেও সাকিব-তাসকিনদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিয়েছিলেন ২২টি উইকেট। এবারও হয়তো সে সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর চেষ্টাই করবেন দেশের ক্রিকেটের এ কিংবদন্তি। অগণিত ভক্ত-সমর্থকরাও মাশরাফির সেই উজ্জ্বল প্রত্যাবর্তনই দেখতে চায়।