দেশে অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কেরানীগঞ্জের ঘটনা অত্যন্ত বেদনার। এ যাবতকালের দগ্ধ হওয়ার ঘটনাগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বা বেশি মাত্রায় পোড়া রোগী এসেছে এই অগ্নিকাণ্ডে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ভবনে সাংবাদিকদের একথা বলেন প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে এমন আগুনে পোড়া রোগী রয়েছে যাদের মুখ চেনা যাচ্ছে না, শ্বাসনালী খুব খারাপভাবে পুড়ে গেছে এবং যে ১০ জন রোগী এখনও রয়েছে তাদের সকলের শরীরের ৬০ থেকে ৮০ ভাগ পোড়া এবং আব্দুর রাজ্জাক নামের একজনের শতভাগ পোড়া।
সর্বমোট ৩১ রোগী ছিলেন তার মধ্যে একজন স্পটেই মারা গেছেন। তবে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে যারা ভর্তি আছেন, তারা সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত। তাদের শরীরে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন ১০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন। প্রত্যেকেই লাইফসাপোর্টে আছেন। সবার শ্বাসনালীতে পোড়া।
ডা. সামন্ত বলেন, আমার ৪০ বছরের অভিজ্ঞতায় এত ভয়াবহ অগ্নিদগ্ধ আমি কখনো দেখিনি। যেমন গতকালকে এখানে একজন রোগী মারা গেছেন, যাকে তার স্ত্রী চিনতে পারেননি। মুখমণ্ডল এমনভাবে বিকৃত হয়েছিল। পরে তার হাতের কাটা দেখে তাকে শনাক্ত করতে পেরেছেন।
তিনি আরও বলেন, এদের মধ্যে একজন আব্দুর রাজ্জাক, যার শরীরের শতভাগ পুড়ে গেছে। তিনি অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছেন, যেকোনো সময় তার অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কোথাও শতভাগ দগ্ধ রোগীকে বাঁচানো সাধারণত সম্ভব হয় না। আমরা চেষ্টা করছি, বাকিটা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। বাকি যারা আছেন, তাদেরও শরীরের ৬০ থেকে ৮০ ভাগ পোড়া রয়েছে। প্রত্যেকেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে এবং মুখমণ্ডল ও শ্বাসনালী এমনভাবে পুড়েছে যে, সেটা রিকভার করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার।
রোগীর স্বজনদের সবসময় সবকিছু জানানো হচ্ছে, চিকিৎসাও সঠিকভাবে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে চিকিৎসা যেন সঠিকভাবে হয় এবং ব্যয়ভার যেন সরকার বহন করে, সেভাবেই সব চলছে। আর আমরা এ পর্যন্ত ৬০ ভাগ পোড়া রোগী বাঁচাতে পেরেছি।