Monday , December 2 2024
You are here: Home / Uncategorized / মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের কলঙ্কিত দিন আজ

মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের কলঙ্কিত দিন আজ

আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ঊষালগ্নে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর দুঃসহ যন্ত্রণার দিন। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের কলঙ্কিত দিন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণ শুরু করে, তাদের পরাজয় যখন অনিবার্য তখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান অর্থাৎ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মেধাবী মানুষদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহ বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। টেলিভিশন ও রেডিওতে প্রচার করা হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। দেশের সংবাদপত্র ও অনলাইন পত্রিকাগুলো বিশেষ প্রবন্ধ প্রকাশ করবে। দেশের সর্বত্র আজ জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। শোকের প্রতীক কালো পতাকাও উড়বে। মিরপুর ও রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে ফুল হাতে নামবে শ্রদ্ধাবনত মানুষের ঢল। শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, গান, আবৃত্তি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।

স্বাধীন বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও নতুন রাষ্ট্রকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাঙালি জাতি যাতে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয় বাঙালি জাতি। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আত্মদান ও দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি ক্ষেত্রে এদেশের কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, চিত্রশিল্পী, সঙ্গীত শিল্পী, চলচ্চিত্রকারসহ বুদ্ধিজীবীদের অপরিসীম অবদান রয়েছে। নিরস্ত্র বাঙালিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি এদেশের বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

বীর বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এদেশের রাজাকারদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশকে চিরদিনের জন্য মেধাশূন্য করার অপচেষ্টায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী ওই সকল রাজাকারদের বাঙালি জাতি কোনোদিন ক্ষমা করবে না বা করতে পারে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য ও সুদৃঢ় নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী ও ১৪ ডিসেম্বরের কলঙ্কজনক বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী শীর্ষ কয়েকজন যুদ্ধাপরাধী রাজাকারের বিচার কার্য সম্পন্ন ও রায় কার্যকর হয়েছে। তার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন-সাধ উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তথা ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি :

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েচে আওয়ামী লীগ। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল সোয়া ৭টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও ৮টা ৪৫মিনিটে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। বিকেল ৩টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য দল ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!