মানুষের জীবন রক্ষায় এবং নিরাপদ রেল চলাচল নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ রেলক্রসিং বন্ধ, বৈধ রেলক্রসিং চিহ্নিত করে ফেঞ্চিংয়ের (কাটা তারের বেঁড়া দেওয়া) কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রেল সচিব, স্থানীয় সরকার ও সড়ক সচিব, রেলের মহাপরিচালক ও পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে, এসব বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি জানাতে স্থানীয় সরকার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন একলাছ উদ্দিন ভূইয়া।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন একলাছ উদ্দিন ভূইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
এর আগে ২৪ নভেম্বর রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী।
রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রেল সচিব, স্থানীয় সরকার ও সড়ক সচিব, রেলের মহাপরিচালক ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে।
২৪ নভেম্বর একলাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, সারাদেশে একহাজার ৪শ’ ১২টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। বুয়েটের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এআরআই’র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ২৩৫ টি দুর্ঘটনায় ২৪৪ জন মানুষ মারা গেছে এবং ২২৮ জন আহত হয়েছে। ২০১৭ সালে ২১১টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন মারা যায় এবং ১৫৫ জন আহত হয়। ২০১৬ সালে ৫৬টি দুর্ঘটনায় ৫৯ জন মারা যায় এবং ৪৬ জন আহত হয়।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের আগস্টে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকাশিত ডাটাবেজ অনুযায়ী সারাদেশে ৯৪৬টি লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় আছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন অনুযায়ী রেলওয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে ফেঞ্চিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুযোগ আছে। কিন্তু এত দুর্ঘটনার পরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
রিটের আবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে রেল বিভাগে এক হাজার ৪১২টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। বুয়েটের দুর্ঘটনাবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (এআরআই) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ২৩৫টি দুর্ঘটনায় ২৪৪ জন মানুষ মারা যান এবং ২২৮ জন মারাত্মকভাবে আহত হন। ২০১৭ সালে ২১১টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন মারা যান এবং ১৫৫ জন আহত হন। ২০১৬ সালের ১০ মাসে ৫৬টি দুর্ঘটনায় ৫৯ জন মারা যান এবং ৪৬ জন আহত হন।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বর-কনেসহ ১০ জন মারা যান এং পাঁচ জন গুরুতর আহত হন।