আগামীকাল মহান বিজয় দিবস। পাকিস্তানের কাছ থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের দিন কাল ১৬ ডিসেম্বর। অফুরন্ত আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের ৪৮ বছর উদযাপন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। দিবসটিকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও থাকছে নানা আয়োজন।
বিজয় দিবস সরকারি ছুটির দিন। রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হবে আলোকসজ্জা। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোয় পরিবেশন করা হবে উন্নত মানের খাবার। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে, বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।
বিশেষ এ দিবসটি ঘিরে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। গতকাল দলের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হবে দলের পক্ষ থেকে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা করা হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে বিজয় দিবসকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। এদিন যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করবে ঢাকা মহানগর পুলিশ। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি এদিন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় থাকবে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা। এছাড়া র্যাবের পক্ষ থেকেও দিনটি ঘিরে নেয়া হয়েছে ব্যাপাক নিরাপত্তা প্রস্তুতি।
মহান বিজয় দিবসের নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করতে ৪ ডিসেম্বর ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষকদের ও বাংলাদেশ পুলিশের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ডিএমপি। ডাকসুর সহযোগিতায় এদিন বেলা ২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলের মাঠে এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন শিল্পী মমতাজ বেগম, জেমস ও তার ব্যান্ড নগর বাউল এবং চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমিসহ অন্যান্য সংগীতশিল্পী।