Sunday , April 20 2025
You are here: Home / Uncategorized / বিহারিদের কারণে দেরিতে শত্রু মুক্ত হয় রাজবাড়ী

বিহারিদের কারণে দেরিতে শত্রু মুক্ত হয় রাজবাড়ী

১৮ ডিসেম্বর, রাজবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশ যখন বিজয়ের আনন্দে ভাসছে, তখনও রাজবাড়িতে চলছিল অবাঙালি বিহারিদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ। যে কারণে রাজবাড়ী স্বাধীন হয় বিজয় দিবসের দুই দিন পর ১৮ ডিসেম্বর। সে সময় যুদ্ধে শহীদ হন খুশি, রফিক, সফিক, সাদিসহ অনেকে।

১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও রাজবাড়ী শহর তখনও বিহারিদের কবল থেকে মুক্ত হয়নি। ১৪ ডিসেম্বর থেকে অবাঙালি, রাজাকার, বিহারিদের সঙ্গে চলতে থাকে সম্মুখ যুদ্ধ। অবাঙালি বিহারিরা সশস্ত্র হওয়ায় ১৬ ডিসেম্বর মুক্ত করা যায়নি রাজবাড়ীকে। পড়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাশের জেলা কুষ্টিয়া, মাগুরা, যশোর, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিবাহিনী এসে জেলা শহরে সংগঠিত হয়। এ খবরে বিহারিরা রেল লাইনের পাশে অবস্থান নেয় এবং লোকো শেড থেকে ড্রাই-আইস ফ্যাক্টরি পর্যন্ত মালগাড়ি দিয়ে বাধা তৈরি করে।

RAJBRAI-MOKTO

এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা বিহারিদের ঘিরে গুলিবর্ষণ করতে থাকলে মালগাড়ির কারণে কোনো কাজ হয়নি। পরবর্তীতে বিকল্প হিসেবে যশোর থেকে আনা মর্টারশেল থেকে গুলিবর্ষণ করলে বিহারিরা পিছু হটে। একপর্যায় বিহারিদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী শত্রু মুক্ত হয়।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল রাত ৩টার দিকে আরিচা থেকে বেলুচ রেজিমেন্টের মেজর চিমারের নেতৃত্বে ‘রণবহর’ নিয়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ঝাপিয়ে পড়ে পাকবাহিনী। এ থেকেই যুদ্ধের সূচনা হয় রাজবাড়ীতে এবং চলতে থাকে অবাঙালি, বিহারী, পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে যুদ্ধ। পর্যায়ক্রমে তা পুরো রাজবাড়ীতে ছড়িয়ে পড়ে।

RAJBRAI-MOKTO-2

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজি আব্দুল জলিল কুটি, এমএ সেলিম, খোরশেদ আলম খান, মজনু খানসহ অনেক বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশ বিজয় অর্জন করে। কিন্তু তখন রাজবাড়ীর প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। রাজবাড়ী ছিল বিহারী অধ্যুষিত এলাকা। যে কারণে রাজবাড়ী শত্রু মুক্ত করতে দুই দিন সময় বেশি লাগে।

সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, রাজবাড়ীতে যুদ্ধ হয় ৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে এবং রাজবাড়ী শহর ছিল অবাঙালি বিহারি অধ্যুষিত এলাকা। ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে মুক্তিযোদ্ধারা রাজবাড়ী শহর ঘিরে ফেললে অবাঙালিদের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। এখানে প্রায় ১০ হাজারের অধিক অস্ত্রধারী স্বাধীনতা বিরোধীরা থাকার কারণে দীর্ঘ সময় যুদ্ধ করেও মুক্তিযোদ্ধারা পেরে ওঠেননি। কিন্তু তাদের ঘিরে রেখেছিলেন। পরে যশোর, মাগুড়া, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এসে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যে করলে ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ীকে শত্রু মুক্ত করা হয়।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!