কুষ্টিয়ার শহরে গড়ে ওঠা রীবন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় হ্যান্ড স্যানিটাইজারের নামে রমরমা ব্যবসা শুরু করেছে। যখন করোনার ভয়ে মানুষ চাল না কিনে পরিস্কার থাকার জন্য সাবান এবং হ্যান্ডস্যানিটাইজার কিনছে তখন এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করে নিচ্ছে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়। জাতির এই ক্লান্তিলগ্নে সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিটি জেলার প্রশাসককে জীবানুনাশক হিসেবে ৫০০ লিটার করে এ্যালকোহল দেয় সরকার। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের নামে বরাদ্দকৃত এ্যালকোহল মানব সেবায় ব্যবহার করার নামে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় বরাদ্দ নেয়। আর সেই এ্যালকোহল দিয়ে উৎপাদন করছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। প্রথম দিন ১০০ মিলি ২০ টাকা করে বিক্রি করলেও এখন তার মূল্য দাড়িয়েছে ১শ টাকা। মানুষের বিপদকে পূজি করে তারা যে ব্যবসা করছে তা কতটুকু যৌক্তিক? এমন প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ। এদিকে যে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিষ্ট্রি ল্যাব নেই সেই বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে মান নিয়ন্ত্রন করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি করছে এই প্রশ্নও উঠেছে সুশীল সমাজে। মানব কল্যানে ব্যবহারের পরিবর্তে সরকারী উৎপাদিত এ্যালকোহল দিয়ে তারা ব্যবসা করে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন যাবৎ এই ঘটনা দেখে অনেকে বলেছে মনে হচ্ছে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করছে। এদিকে আইন অনুযায়ী হ্যান্ডস্যানিটাইজার বানাতে হলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। তা স্থানীয় ঔষধ প্রশাসন পারেনা। ডিজিডিএ মান নিয়ন্ত্রন প্রমাণিত সাপেক্ষে ঔষধ উৎপাদনকরী প্রতিষ্ঠানকে এই অনুমোদন দিয়ে থাকে। কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হলো এখানে সকল আইনই যেন অগ্রাজ্য। এ্যালকোহল নিয়ন্ত্রক ডিএনসি। কিন্তু রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডস্যানিটাইজার বানানোর ল্যাবে কোন ডিএনসির কর্মকর্তার উপস্থিতি নেই। এই এ্যালকোহল অবৈধ ভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি না তা দেখারও কেউ নেই। এছাড়া বিক্রয় বিপননের অনুমোদন না নিয়ে শহরের সকল ঔষধের দোকানে বিক্রি হচ্ছে রবীন্দ্রমৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডস্যানিটাইজার। ড্রাগ রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া কোন ঔষধের দোকানে হ্যান্ডস্যানিটাইজার বিক্রিও ড্রাগ আইনে অবৈধ। এসব ব্যাপারে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্ট্রিবোর্ডের সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন বিষয়ে জবাব দিতে আমি বাধ্য নই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শিরিন আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। সরকার থেকে জেলা প্রশাসকদের ৫০০ লিটার এ্যালকোহল দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে নিয়ে থাকতে পারে। সূত্র জানায়, ১০০ মিলি হ্যান্ডস্যানিটাইজার বানাতে বোতল কালার পানি এবং এ্যালকোহল দিয়ে খরচ হয় ১২ টাকা। কিন্তু রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম দফায় দফায় বেড়ে এখন ১ শ টাকা হয়েছে।
এদিকে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক ও দৈনিক সময়ের কাগজ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নূরুন্নবী বাবু জানান, আমি নিজে সোমবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ক্রয় করতে যায়। সেখানে কর্তৃপক্ষ ৫ শ গ্রামের বোতল ৫শ টাকা নেয়। যে টা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে।
এব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, মানব কল্যানে ব্যবহার করার জন্য তাদের এ্যালকোহল দেয়া হয়েছে। ব্যবসা করার জন্য নয়। এব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।