Thursday , January 16 2025
You are here: Home / জাতীয় / আপাতত মুক্তি মিলছে না কারাবন্দিদের
আপাতত মুক্তি মিলছে না কারাবন্দিদের

আপাতত মুক্তি মিলছে না কারাবন্দিদের

করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। অনেক দেশে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে বাংলাদেশে এখনো করোনা ভাইরাসের কারণে কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি ভাবছে না সরকার।

কারা সূত্রে জানা গেছে, কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুসারে যারা ২০ বছর সাজাভোগ ইতোমধ্যে শেষ করছেন তাদের মুক্তি দিতে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এমন একটি প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল কারা অধিদপ্তর। সেই তালিকা ধরেই কারাবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। ওই তালিকায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ মোট ১৪২০ জনের নাম রয়েছে। তবে এই তালিকাটি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে করা হয়নি।

তবে কারা অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর আগে ডিসেম্বরে যে তালিকা তারা পাঠিয়েছে সরকার চাইলে সেই তালিকা থেকে বন্দিদের বর্তমান পরিস্থিতিতে মুক্তি দিতে পারে।

এর আগে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এক হাজারের বেশি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি মুক্তি পেয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি থাকা বৃদ্ধ, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ—এই পাঁচটি শ্রেণির এক হাজার বন্দীকে তখন মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলেন, তাদের কাছে গত ডিসেম্বরে একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এসব করোনা সংক্রামককে সামনে রেখে নয়। এসব তালিকা তারা নিয়মিত পাঠান। তারা বলেন, আমরা মাদক ও খুনের মামলা বাদ দিয়ে হয়তো বড়জোর তিন শ জনের একটি তালিকা করতে পারি। তাও যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা কোনো তালিকা করিনি এবং মুক্তির সিদ্ধান্ত নিইনি। বিষয়টা খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে। চিন্তাভাবনা চলছে। অনেক দিন ধরেই কারা অধিদপ্তর ৫৬৯ ধারায় বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করছেন। এটার জন্য কমিটি আছে। কমিটি যাচাই -বাছাই করবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । কতজন মুক্তি পেতে পারেন সেটা বিবেচনা হবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষরের পর।

কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ে অনেক আগেই প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এটি নিয়মিত কাজ। কিন্তু এখনো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের কিছু জানায়নি। ২০ বছর সাজা খাটার পর কারাবিধির ৫৬৯ ধারায় অসুস্থ ও অচল বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে। আগেও দেওয়া হয়েছে। তবে এখন যেহেতু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি আসনে আসছে তাই গুরুত্ব দিয়েই তাড়াতাড়ি বন্দি মুক্তি চাইছেন।

কারাগারের একজন কর্মকর্তা জানান, কারা অধিদপ্তর থেকে ৫৯৪ বিধিতেও ২১ জন অচল অক্ষম, অন্ধ পঙ্গু ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত বন্দির মুক্তির প্রস্তাব জেলা কমিটি থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ৩০৯২ জন হাজতি বন্দির জামিন যোগ্য ধারায় আদালত চাইলে মুক্তি দিতে পারে এই তালিকা কারা অধিদপ্তর পাঠিয়েছে। তবে কিছু নির্ভর করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়রে সিদ্ধান্তের ওপর।

বিশ্বজুড়ে মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়াকরোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে আট লাখ মানুষ, ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৫৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, ৬ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে।

নভেল করোনা ভাইরাস জনিত রোগ কোভিড-১৯ অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে বলে কারাগারগুলোতে ঝুঁকির মাত্রা থাকে অত্যন্ত বেশি। চীনসহ কয়েকটি দেশের কারাগারে এর আগে ভাইরাস ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকি এড়াতে ইরানও এর আগে বিশেষ ব্যবস্থায় বন্দিদের সাময়িক মুক্তি দিয়েছে।

দেশের ৬৮টি কারাগারের ৯০ হাজারের মত বন্দি রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসে কোনো বন্দি আক্রান্ত হননি। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৪০ জন বন্দিকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!