Thursday , January 16 2025
You are here: Home / খুলনা ও বরিশাল / জনম দুঃখী ওরা ৪জন
জনম দুঃখী ওরা ৪জন

জনম দুঃখী ওরা ৪জন

করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে সরকারী ভাবে সকল মানুষকে যখন লকডাউনে থাকার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ওই ঘোষণার বাইরে এতিম আশিক ও তার ভাই-বোনরাও নয়। এতিম কিশোর আশিকসহ ৪ ভাই-বোন দিনরাত চা বিক্রির পাশাপাশি স্কুলে লেখাপড়া চালিয়ে আসছিল। লকডাউনের কারণে তাদের চা বিক্রি বন্ধ হয়েছে। কিন্তু পেট তো আর থেমে থাকে না। জনপ্রতিনিধিদেও মাধ্যমে একদিন কয়েক কেজি চাউল আর সামান্য সবজি পাওয়া গেলেও তাতে তো আর ৪ ভাই-বোনের সংসার চলবে না। তাই কিভাবে ৪ ভাই-বোনের পেট চালাবে এমনই চিন্তিত কিশোর আশিক। মায়ের পরপারে যাওয়া আর বাবার অন্য সংসার জীবন গড়ার কারণেই তাদের এমন হাল।

যে বয়সে লেখা-পড়া ও খেলা-ধুলা আর ছোটাছুটি করার কথা। সে বয়সে লেখা-পড়া করলেও সংসার চালানোর মতো সংগ্রামী জীবন নিয়ে বেঁচে আছি অশ্রুঝরা চোখে এমনটি বলছিল এতিম আশিক।

আশিক সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতের সময় বলে, আমাদের মতো এমন এতিম যেনো কেউ না হয়।
প্রিয় পাঠক, এতোক্ষণ বলছিলাম। কিলোর আশিক ও তার ছোট ভাই-বোনের সংগ্রামী জীবনের কথা। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের কসবা গ্রামে (তাদের) আশিকদের বাড়ি।


বাবার নাম রাশিদুল ইসলাম। সে পেশায় দিন মজুর। আশিকদের মা গত ৪ বছর আগে স্ট্রোকে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর বাবা রাশিদুল বিয়ে করে অন্যত্রে চলে যান। আশিক বাবা-মায়ের বড় ছেলে। তার বয়স সবে মাত্র ১৩ বছর। মেজো ভাই মোস্তাকিনের বয়স ৯ বছর। সেজো কুলছুম খাতুনের বয়স ৮বছর ও ছোট ভাই রিয়াজের বয়স ৭ বছর। বড় ভাই আশিক তৃতীয় শ্রেণীতে লেখা-পড়া করে। মোস্তাকিন ও কুলছুম প্রথম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। ছোট ভাই রিয়াজ শিশু শ্রেণীর ছাত্র। তারা সবাই কসবা ডিপিবি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
আশিকদের নানা বাড়ি একই উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের পীরতলা গ্রামে। আশিকসহ ৪ভাই-বোন এখন দাদার বাড়ি কসবা গ্রামে থাকে। দিন মজুর দাদা-ও গৃহিনী দাদি বেঁচে থাকলেও তারা বয়সের ভারে কাজ করতে পারে না।
স্থানীয়রা জানান,গ্রামের লেকজন আশিককে কিছু টাকা দিয়ে বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকান দিয়ে দেয়। আশিক চা বিক্রির পাশাপাশি স্কুলেও যায়। তার চা বিক্রির কাজে আরো তিন ভাই-বোন সহযোগিতা করে। দাদা বৃদ্ধ তাই তাদের পাশে বসে মানসিক শক্তি যোগায়। ইতোপূর্বে তাদের এ কষ্টের কথা শুনে কয়েকটি সংগঠন ও ব্যক্তি সহযোগিতাও করেছিল। বর্তমান করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে থেকে তাদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
প্রিয় পাঠক, মানুষ মানুষের জন্য এ শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে এ সংগ্রামী জীবনে একটু সফলতার মুখ দেখাতে আপনিও পারেন এতিম শিশুর পাশে দাঁড়াতে।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!