কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া :
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার চরাঞ্চলে চিনা বাদামের ভালো ফলন পেয়েছেন চাষিরা। একই সঙ্গে বাদামের দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা এবার বেশ খুশি। বর্তমানে উপজেলার ফিলিপনগর, মরিচা, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ পদ্মার চরে বাদাম ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর লক্ষমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে চিনা বাদামের চাষ হয়েছে। চলতি বছর বাদাম চাষের লক্ষমাত্রার ধরা হয়েছিলো ৫১০ হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বাদামের আবাদ হয়েছে ৮২০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০শতাংশ বাদাম উত্তোলন করা হয়েছে। ফলন হয়েছে গড়ে প্রায় ২.৪ মেট্রিক টন। বর্তমানে বাজারে ২৬শ’ থেকে ৩হাজার টাকা পর্যন্ত মণ প্রতি বাদাম বিক্রি হচ্ছে বলে জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ। উপজেলার মুন্সিগঞ্জের বাদাম চাষি আব্দুল জব্বার জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগের প্রভাবে কিছুটা ফলনে ঘাটতি হয়েছে। তারপরও খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভ হবে আশা করি। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকার বাদাম চাষি আফতাব উদ্দিন জানান, এবছর প্রায় ছয় বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করা হরেছি। এক সময় যে জমি কোনো কাজেই আসত না, সেই জমিতে এখন বাদাম ফলিয়ে বেশ লাভ হচ্ছে। সোনাতলা গ্রামের কৃষক মহিদুল ইসলাম জানান, এবার সাত বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ায় এ বছর বাদাম চাষে ভালো ফলন হয়েছে। ফিলিপনগর চর এলকার বাদাম চাষি ইসমাইল হোসেন জানান, এ বছর প্রায় ১০ বিঘা জমিতে চিনা বাদামের চাষ করেছি। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা করে। বিঘা প্রতি ফলন হচ্ছে প্রায় ৪ থেকে ৫ মন হারে। বাদাম ক্ষেতে কাজ করা রহিমা খাতুন জানান, পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও বাদাম ক্ষেতে কাজ করে সংসারের খরচ জোগাচ্ছে। কৃষকের ক্ষেতে গাছ থেকে বাদাম ঝরিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিনশ টাকা মুজুরী পাওয়া যায়। উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সজীব আল মারুফ বলেন, চলতি বছর লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে বাদামের চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষেত থেকে প্রায় ৮০শতাংশ বাদাম উত্তোলন করা হয়েছে। ফলন হয়েছে প্রায় ২.৪ মেট্রিক টন। বর্তমানে বাজারে ২৬শ’ থেকে ৩হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি মণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে। ফলে খরচ বাদে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। সজীব আল মারুফ আরও বলেন, এবার প্রণদনা এবং বিভিন্ন প্রকল্পের প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রায় ৩৩০ চাষিকে বাদামের বিজ এবং সার সহায়তা দেয়া হয়েছে। এতে চাষিরা উপকৃত হয়েছেন। ভবিষ্যতে প্রণদনার পরিমাণ বাড়ানো গেলে চরাঞ্চলের অনাবাদি জমি বাদাম চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
