Thursday , May 22 2025
You are here: Home / বিদেশ / ভারতকে বড় শিক্ষা দেয়ার হুমকি চীনের
ভারতকে বড় শিক্ষা দেয়ার হুমকি চীনের

ভারতকে বড় শিক্ষা দেয়ার হুমকি চীনের

 

রুপান্তরঃ আব্বাস আলী। ঝিনাইদহ।
তথ্যসুত্রঃ বিভিন্ন গণমাধ্যম

লাদাখে সংঘাতের পর এবার ভারতকে ‘বড় বেইজ্জতি’র হুঁশিয়ারি দিল চীনের সংবাদমাধ্যম। সীমান্তে প্রয়োজন হলে অস্ত্র ব্যবহারে ভারতীয় সেনাদের অনুমতি দেয়ার পর চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

গত ১৫ জুন লাদাখে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে চীনের সেনাদের। সেখানে ২৩ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। তবে ভারতও দাবি করেছে, সংঘর্ষে চীনের ৪০ সেনা নিহত হয়েছে।

এ ঘটনার পর দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। দফায় দফায় বৈঠকেও কোনো সুরাহা আসেনি। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন। বৈঠক থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অস্ত্রের ব্যবহারের স্বাধীনতা দেয়া হয়। এখন থেকে লাদাখে অস্ত্রের ব্যবহার প্রয়োজন হলে পিছপা হবে না ভারতীয় সেনারা।

ভারতের এই সিদ্ধান্তের পর চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইম একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারত যদি চীনের সাথে যুদ্ধ করতে চায় তাহলে ৬২ সালের চেয়েও বড় বেইজ্জতি সইতে হবে। উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালে ভারত-চীনের মধ্যে যুদ্ধ হয় এবং ভারত পরাজিত হয়।

গ্লোবাল টাইমসের ওই রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে তাদের ভেরিফায়েড পেজে লিখেছে, ‘চীনের এই মন্তব্যে গা জ্বলে যাবে আপনার! যুদ্ধ করলে ’৬২-র চেয়েও বড় বেইজ্জতি সইতে হবে ভারতকে। সেনাকে স্বাধীনতা দেওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা হুঙ্কার চীনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসের।’

এদিকে লাদাখ সীমান্তে ভারত-চীন সেনাদের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায়, বেইজিং-এর বিরুদ্ধে কলকাতায় বিক্ষোভ হয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতীয় রাজনীতিবিদরাও। সীমান্তে সংঘর্ষে ভারতের নিহত ২৩ জওয়ানের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দুই সেনা সদস্য রয়েছেন।

কলকাতা থেকে প্রায় তিনশ কিলোটিমার দূরে বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজেশ ওরাং। চলতি মাসে বিয়ের কথা চলছিল এ সেনা সদস্যের। কিন্তু সোমবার লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনা সেনাদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণ হারান ২৫ বছর বয়সী তরুণ সেনা রাজেশ।

এদিকে চীন ও ভারতের মধ্যে চলমান সংঘাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে, উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস এ আহ্বান জানান।

এ ঘটনায় অ্যান্তনিও গুতেরেসের পক্ষে তার মুখপাত্র এরিক কানেকো বলেন, আমরা ভারত ও চীনের মাঝামাঝি সীমান্ত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। তবে এটা ইতিবাচক যে, উভয় দেশ উত্তেজনা নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে।

এর আগে, ১৯৭৫ সালে ভারত-চীন সীমান্তে শেষবার কোনও সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর থেকে ওয়েস্টার্ন সেক্টরে লাদাখে বা ইস্টার্ন সেক্টরে অরুণাচলে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি কম হয়নি। কিন্তু এ ধরনের প্রাণঘাতী মারামারি কখনও হয়নি।

তবে এই সংঘাতে কোনও পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনি। লোহার রড, লাঠি, পাথর নিয়ে হামলা করেছে চীনা সেনা। তারপরই প্রত্যাঘাত করেছে ভারতীয় সেনারা।

ভারত ও চীনের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশ দুটি বেশ কিছুদিন ধরে সীমান্তে ভারী অস্ত্র মজুত করেছে। পূর্ব লাদাখের সীমান্ত অঞ্চলে ধীরে ধীরে এসব অস্ত্র নিয়েছে দুই দেশ। ভারী অস্ত্রের মধ্যে কামান এবং যুদ্ধের গাড়িও রয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘাতের পরিবেশ বিরাজ করায় এসব অস্ত্রের মজুত করা হয়েছে।

কিছুদিন আগে ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল, চীন সেনাবাহিনী সীমান্তের যে এলাকায় রয়েছে সেখান থেকে ভারতের অংশে ঢুকতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা লাগবে। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের বিভিন্ন জায়গায় ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়াচ্ছে চীনা বাহিনী।

ভারতীয় সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়, চীনের সেনাবাহিনী লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের কাছের ঘাঁটিগুলিতে নানান যুদ্ধের গাড়ি ও ভারী যুদ্ধের সরঞ্জাম নিয়ে এসেছে। বিষয়টি জানতে পেরে ভারতও আর্টিলারের মতো অস্ত্র ওই এলাকায় পাঠিয়েছে।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!