Thursday , May 22 2025
You are here: Home / Uncategorized / করোনার কারণে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী রথের নেই কোন আনুষ্ঠানিকতা
করোনার কারণে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী রথের নেই কোন আনুষ্ঠানিকতা

করোনার কারণে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী রথের নেই কোন আনুষ্ঠানিকতা

নিজস্ব প্রতিনিধি :
করোনা মহামারীতে এবার কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী  রথের আনুষ্ঠানিকতা  নেই। হবেনা রথটানা। বসবেনা মেলা। আজ ২৩ জুন মঙ্গলবার শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। কুষ্টিয়ার এ রথযাত্রাকে ঘিরে বড়বাজার থেকে মোয়াজ্জেম ষ্টোর পর্যন্ত প্রতিবছর বসে বিশাল মেলা। প্রচুর লোক সমাগমও ঘটে মেলায়। দুরদুরান্ত থেকে দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে মেলায়।  তবে এ বছর করোনা মহামারীতে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী  রথের আনুষ্ঠানিকতা নেই। হবেনা রথটানা। বসবেনা মেলা। জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সহ-আইন সম্পাদক এ্যাডভোকেট শীলা বসু (এজিপি) জানান, কুষ্টিয়ার রথটি ঐতিহ্যবাহী রথ। বহু যুগযুগ ধরে এ রথউৎসব হয়ে আসছে। কিন্তু এ বছর মহামারী করোনার কারণে কোনো আনুষ্ঠানিকতা হবেনা। শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণ কান্তি চাকী (খোকন) জানান, এ বছর রথ টানা হবেনা।  মেলা করতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনো রকম আনুষ্ঠানিকতা হবেনা।
কুষ্টিয়া ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ বৈষ্ণব আনন্দ দাস বলেন, এবার রথটানা হবেনা। মন্দিরের মধ্যে ভক্তবৃন্দ বাদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু যগ্গ করা হবে।
জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ সাহা জানান, কুষ্টিয়ায় ২টি রথ হয়। প্রথমটি শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর মন্দির এর রথ। পরেরটি ইসকন মন্দিরের। করোনার কারণে এ বছর রথটানা হবেনা। শুধু ধর্মীয় পুজা হবে। তাও মন্দিরে মধ্যে।
জানাগেছে, এক সময় কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী রথটি পিতলের তৈরি ছিল। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক সেটি ধবংস হয়। পিতলের রথের ব্যাপারে কুষ্টিয়া শহরের আড়য়াপাড়ার হেমচন্দ্র লাহিড়ী লেনের  গৌর চন্দ্র পাল সূত্রে জানাগেছে, ইংরেজী ১৯২০ সালে কুষ্টিয়াতে কাঠের নির্মিত বড় রথ ছিল। সেই কাঠের রথটি প্রতিবছর রথ অনুষ্ঠানের ২/৩ মাস আগে থেকে রং ও পরিস্কারের জন্য কুষ্টিয়ার বিত্ববানদের নিকট চাঁদা নির্ধারণ করার জন্য, শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর মন্দিরে সভা হত। কুষ্টিয়া শহরতলীর বাড়াদী গ্রামে মাখন লাল রায় চৌধুরী ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সভায় নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন। একবার সভা শেষ হবার পর  দেরীতে তিনি উপস্থিত হলেন। তখন অনেকে ঠাট্টা করে বলেছিলেন, ‘‘ দেরী করে আসলে কি আপনার চাঁদা কম হবে ?’’ তখন মাখন লাল রায়  চৌধুরী বলেছিলেন, ‘‘ঠিক আছে এরপর থেকে আর কাউকে চাঁদা দিতে হবে না। আমি নিজেই একটা পিতলের রথ নির্মাণ করে দেব’’। আর তার পর থেকে কুষ্টিয়ায় পিতলের রথযাত্রা উৎসব হত। তবে ওই রথ নির্মাণে কি পরিমান পিতল ব্যবহার করা হয়েছিল তা জানাযায়নি। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক এটি ধবংস হয় বলে জানাগেছে। তবে রথের মাথায় একটি বিগ্রহ মুর্তি চিল, যার ওজন কয়েকমন বলে জানায় অনেকে। রথের মাথায় থাকা পিতলের বিগ্রহটি চুরি হয়ে যায় স্বাধীনতার পরে।

 

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!