কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ঘোড়ারঘাট এলাকার ১০টাকা কেজি চাউলের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ডিলার রফিকুল ইসলাম অসহায় হতদরিদ্র ৫৫জন ব্যক্তি মাসে ৩০ কেজি চাউল পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে কয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম স্বপন গত ১৮ জুন ঘোড়ারঘাট এলাকার চাউলের ডিলার রফিকুল ইসলাম বরাবর লিখিতভাবে জানতে চেয়েছেন খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরের চাউল ৫৫জন ব্যক্তিকে বিলম্বে দেওয়া ও কার্ড রেখে দেওয়া সম্পর্কে লিখিত জবাব চেয়েছেন। করোনাকালীন দূর্যোগ সময়ে কয়া ইউনিয়নের অহসায় হতদরিদ্র ঘরবন্দী কর্মহীন মানুষ এই চাউল না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে।
এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিবুল ইসলাম খান এর সাথে গত রাতে মুঠোফোনে কথা বললে, তিনি জানান, চাউলের ডিলার রফিকুলের দাবী তিনি নতুন যাচাই বাছাইকৃত ৫৪ ব্যক্তি লিষ্ট পাননি। এই কারণে চাউল দেওয়া হয়নি। আমি খাদ্য অফিসকে ৩ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। এ ব্যাপারে কয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গাজির উদ্দিন জানান, চাউলের ডিরার রফিক যাচাই বাছাইবৃক নতুন ৫৪জন সদস্যের চাউল প্রদান করেননি। আজ থেকে ১৫ দিন আগে চাউল দেওয়া শেষ হয়েছে। পুরাতন কোন সদস্যদেরকেও চাউল দেননি ডিলার রফিক। রফিক কয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমানের ছেলে হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য নানা ষড়যন্ত্র করছে। তাই নতুন কার্ডধারীদের কার্ড কেড়ে নিয়েছে। ৬নং ইউপি সদস্য শেহাব উদ্দিন জানান, নতুন সদস্য ৫ থেকে ৬ জনকে ৩মাস পরে চাউল দেওয়া হবে বলে ডিলার রফিক জানিয়েছেন। ৬নং ইউপি সদস্য শেহাব উদ্দিন আরও জানান, কয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি চাউল ডিলার রফিক উদ্দিনের বাবা। তাই সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করছে এই চাউল ডিলার রফিক এবং ডিলারের অফিসে বিএনপি ছাত্রদলের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এই ভুক্তভোগীদেরকে জোর পূর্বক বের করে দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে তোমাদের চাউল দেওয়া হবে না। কার্ড নং-৫৪৮, কয়া ইউনিয়নের রাধাগ্রামের মৃত রমজান শেখের ছেলে বাদশা শেখ জানান, আমার কার্ড আছে, আমি সেই কার্ডে চাউল আনতে যায়। আমাকে বের করে দিয়ে বলা হয় বই ঠিক নেই, বই ঠিক করে নিয়ে আসতে হবে। নতুন কার্ড নং ৫৫৩ রেশমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমাকে চাউল দেওয়া হয়নি। নতুন কার্ড নং ৫৩৫, নাসিমা খাতুন, কার্ড নং-৫৩৮ সুন্দরী, কার্ড নং-৫৪০ মাহেরা খাতুন, কার্ড নং-৫৫০ স্মৃতি খাতুন প্রত্যেকে একই অভিযোগ করে বলেন, আমাকে চাউল দেওয়া হয়নি। একটি সূত্রে জানা যায়, চাউল না পাওয়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে স্বপন কুমার দাস ডিলার রফিকের বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় অভিযোগে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ব্যাপারে কয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম স্বপন জানান, আমার কয়া ইউনিয়নে হতদরিদ্র অসহায় মানুষের সুবিধার্ধে ওএমএস এর ৩টি চাউলের ডিলার রয়েছে। ২ ডিলার নতুন যাচাই বাছাইকৃত সদস্যদের আমি বলার পরে চাউল দিয়েছে।
অথচ ডিলার রফিকে মৌখিকভাবে জানানেও নতুন যাচাই বাছাইকৃত ৫৫ জন সদস্যদের চাউল দেননি। পরবর্তীতে লিখিতভাবে চাউল না দেওয়া কারণ জানতে চেয়েছি। তিনি আরও বলেন, যেহেতু রফিকের বাবা মজিবর রহমান কয়া ইউনিয় বিএনপির সভাপতি। তাই সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্নের উদ্দেশ্যে এমন ষড়যন্ত্র করতে পারে। এদিকে চাউলের ডিলার রফিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।