Thursday , May 22 2025
You are here: Home / Uncategorized / দৌলতপুরের রনির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ
দৌলতপুরের রনির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ

দৌলতপুরের রনির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ

অভিযুক্ত মকলেচ মোল্লা

নিজস্ব প্রতিনিধি :

কুষ্টিয়া জেলার দৌতপুর উপজেলার আদাবাড়ীয়া মধুগাড়ী এলাকার রনি আহমেদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেওয়ার নামে চাকুরী প্রত্যাশিত যুবকদের কাছ প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই চাকুরী প্রত্যাশিত যুবকরা টাকা চাইলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে হয়রানী করছে রনি ও তার সহযোগী মধুগাড়ী গ্রামের ভাদু মোল্লার মকলেচ মোল্লা। সরেজমিনে দৌলতপুর মধুগাড়ী যেয়ে দেখা যায়, রনির সহযোগী মকলেচ মোল্লাকে ঘিরে মধুগাড়ী বাজারে বসে আছে চাকুরী প্রত্যাশিত যুবকরা। এদের ২জনকে গতকাল টাকা দেওয়ার কথা ছিল। রনি টাকা না দিয়ে পালিয়েছে। উপস্থিত সেনাবাহিনীর সিভিল মালি পদে চাকুরী প্রত্যাশিত যুবক ইকলাস উদ্দিন, পিতা খায়েজ উদ্দিন, ধর্মদহ, দৌলতপুর জানান, ৩ বছর আগে সেনাবাহিনীতে চাকুরী পাওয়ার জন্য মখলেচ মোল্লা ও রনির নিকট জমি বিক্রয় করে ২ লক্ষ টাকা দিই। গরুরা গ্রামের শহিদুলের ছেলে শাহ আলম (২০) জানান, ৩ বছর আগে সেনাবাহনীতে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে মকলেচ মোল্লা মধুগাড়ী ও রনি আদাবাড়িয়া আমার নিকট থেকে ৭ লাখ টাকার ব্যাংকের চেক এবং নগদ ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেয় । ২ বিঘা জমি বিক্রয় করে এই টাকা দিয়েছি। আজও চাকুরী হয়নি। একই গ্রামের ভুগোলের ছেলে সবুজ হোসেন (২৩) জানান, রনি আহমেদ ও মকলেচ আমার নিকট থেকে ফাঁকা ব্যাংকের চেক নেয় ও ৩ লক্ষ নগদ টাকা নেয়। রনি ও মকলেচের উপস্থিতিতে আমি এই টাকা দিই। ধর্মদহ গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে জামাল (২২) জানান, একই সময় আমিও সেনাবাহিনীর চাকুরীর জন্য নগদ ২ লক্ষ টাকা ও ব্যাংকের ফাঁকা চেক প্রদান করি মকলেচ ও রনির নিকট। আরও জানা যায়, রনি আহমেদ উল্টো করে চাকুরী প্রত্যাশিতদের টাকা ফেরৎ না দিয়ে তার ও তার বাবার নামে আদম ব্যাপারী বানিয়ে উল্টো মামলা দিয়েছে। এই মামলা থেকে আমরা জামিন নিয়েছি। রনি একের পর এক আমাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এছাড়াও গাংনী উপজেলার হারাভাঙ্গা গ্রামের মাহাবুলের ছেলে রাকবুল (২৩) এর নিকট থেকে ৩ বছর আগে সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেওয়ার জন্য আদাবাড়িয়া রনির ৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেছে। গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামের মুছার ছেলে সজল হোসেন (২২) এর নিকট হতে মকলেচ ও রনি ৪ লক্ষ টাকা নেয়। দৌলতপুর মধুগাড়ী গ্রামের শওকত আলীর ছেলে রশিদুল (২৬) এর নিকট থেকে ২ লক্ টাকা একই গ্রামের মজিদের ছেলে ছোটন (১৮) এর নিকট থেকে ৪ লক্ষ টাকা ও মধুগাড়ী গ্রামের রবির ছেলে স্বাধীনের নিকট থেকে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নেয়। আদাবাড়িয়া গ্রামের হিটুর নিকট থেকে রনি চাকুরী দেওয়ার নাম করে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এভাবে দৌলতপুর ও গাংনী এলাকা থেকে অসহায় চাকুদের জমি জায়গা বিক্রি করে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত রনিকে না পাওয়া গেলেও তার সহযোগী মধুগাড়ী গ্রামের ভাদু মোল্লার ছেলে মকলেচ মোল্লা (৪২) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ১২ জনের নিকট থেকে ২৯ লক্ষ টাকা আমি ও রনি সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেওয়ার জন্য গ্রহণ করেছি। এছাড়াও রনি আমার নিকট থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করে ২ বছর আগে। মোট প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা রনির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ বাদেও আমাদের এলাকা থেকে আরও টাকা পয়সা রনি নিয়েছে। তাতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হতে পারে। রনি আহমেদের কথামত সরল বিশ্বাসে আমি আমার আত্মীয়স্বজনদের নিকট থেকে চাকুরী দেওয়ার জন্য এই টাকা রনিকে দিই। রনি সেনাবাহিনীর চাকুরী ম্যাসেজ দেখায় আমাদের। এতেই বিশ্বাস করে তার নিকট টাকা দিয়েছি। এখন উল্টো রনি আমাদের বিরুদ্ধে হয়রানী মামলাসহ নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং চরম আতংকে রয়েছি আমরা। আমাকে ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী শাহ আলমের বিরুদ্ধে আমাকে বাদী করে মামলা করায় ভয়ে আমি মামলায় স্বাক্ষর করি। এভাবে একের পর এক আমাদেরকে টাকা না দিয়ে উল্টো হয়রানী করে আসছে। দৌলতপুর থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ এসে অজ্ঞাত কারণে চলে যায়। রনি এক সময় পুলিশের চাকুরী করত। চাকুরী ছেড়ে এসে এই প্রতারণা শুরু করেছে। এলাকাবাসী অভিযুক্ত রনি আহমেদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবীতে ফুঁসে উঠেছে। কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগীরা। এই ঘটনায় অভিযুক্ত রনি আহমেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!