কুষ্টিয়া অফিস: কুষ্টিয়ার খোকসায় দাদন ব্যবসায়ী শফিউর ও মিলনদের নির্যাতনে এক ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের স্ত্রী অভিযোগ করছেন।
ডনহতের পরিবারের অভিযোগ, দাদন ব্যবসায়ী শফিউর ও মিলনদের চক্র পাওনা টাকা আদায়ের জন্য পাখি ভ্যানের চালক মনিরুল ইসলামকে (৪২) বৃহস্পতিবার শোমসপুর বাজারের একটি ঘরে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করে। এরপর মনিরুল বাড়িতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
নিহত মনিরুল ইসলাম শোমসপুর ইউনিয়নের পদ্মবিলা গ্রামের কিতাব উদ্দিন শেখের ছেলে। তার মৃত্যুর পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে দাদন ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
মনিরুলের বাবা জানান, করোনাকালে সংসারের তাগিদে তার ছেলে শোমসপুর বাজারের দাদন চক্রের শফিউরের কাছ থেকে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা দাদন নেন। ছয় মাসে সেই টাকা সুদসহ ৭০ হাজারে এসে দাঁড়ায়। ইতিমধ্যে এই দাদন চক্র ৪৫ হাজার টাকা দামের একটি গরু নিয়ে গেছে। এখন তিনি নিজের বাড়ির জমি বিক্রি করে দাদনের টাকা পরিশোধের চেষ্টা করছিলেন। আর এর মধ্যে দাদনচক্রের শফিউর ও মিলন পাওনা আদায়ের জন্য তার ছেলের ওপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে ও নির্যাতন চালায়। দাদন চক্রই তার ছেলে মৃত্যুর জন্য দায়ী। অথচ পুলিশ তাদের কথা শুনছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মনিরুলের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুনের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেলে দাদন ব্যবসায়ী শফিউর ও মিলন তার বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যায় দাদন ব্যবসায়ী শফিউর ও মিলনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে শোমসপুর বাজারে আটকে রেখে মারধর করে। রাতে সে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা করতে শুক্রবার সকাল থেকে কয়েক দফা থানায় গিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে প্রত্যেকবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িত দাদন ব্যবসায়ীদের বিচার দাবি করেন তিনি।
ভ্যানচালক মনিরুল বিষ পানে আত্মহত্যা করেছেন মন্তব্য করে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুমজ্জামান তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওসি জানান, লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হচ্ছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।