নিজস্ব প্রতিবেদক : নোভেল করোনা ভাইরাস আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় যেমন ছন্দপতন ঘটেছে, তেমনই ধাক্কা খেয়েছে দেশের অর্থনীতি। চাকরি হারিয়ে বেকারত্বের শিকার হয়েছে অনেকেই। পকেটে পড়েছে টানা। টানা হেঁসেলে এমতাবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে কম পুঁজিতে শুরু করা যেতে বেশ কয়েকটি ব্যবসা। আবার বাড়িতে বসে যারা অস্থির হয়ে উঠেছেন, এই সময়ে বাড়িতে থেকে কোনও কাজ করতে পারছে না এবং উপার্জন করতে চাইছেন তাদের জন্যও রয়েছে একটি উপায়। আর তা হল পাপড় তৈরি এবং বিক্রির ব্যবসা।
জানা যায়, আমাদের দেশে পুরুষ মহিলা যে কেউ বাড়িতে বসেই এই কাজ শুরু করে দিতে পারেন। এতে কম সময়ে ভালো মুনাফা পাওয়া যায়। পাপড় বিভিন্ন রকমের তৈরি করা যেতে পারে। আর স্বাদের ভিত্তিতে এর চাহিদাও ভালো। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গ পর্যন্ত সর্বত্রই এর চাহিদা তুঙ্গে। দুপুরের, রাতের খাবারের সঙ্গে হোক বা চাটনির সঙ্গে অথবা স্ন্যাকস হিসেবে, বিভিন্নভাবে পাপড় খাওয়া যেতে পারে। আর বাড়িতে এই পাপড় তৈরি করাও খুব সহজ। তবে এই ব্যবসার জন্য ৫০-৭০ বর্গমিটার জায়গার প্রয়োজন যেখানে শুধু পাপড় তৈরি নয়, তা শুকিয়েও নিতে পারবেন। সঙ্গে ড্রায়ার মেশিন থাকলে এই কাজ আরও সহজে হয়ে যাবে।
কীভাবে তৈরি করবেন পাপড়, আপনি আপনার ইচ্ছে মতো বিভিন্ন স্বাদের পাপড় তৈরি করতে পারেন। আপনার এলাকা বা বাজারে ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী পাপড় তৈরি করলে বিক্রির সম্ভাবনা আরও বাড়বে। ডাল, সোডিয়াম বাই কার্বোনেট, তেল, মরিচ এবং মশলা, হিং খুব কম উপাদানেই তৈরি হয়ে যায় পাপড়। পাপড় তৈরির মেশিন, পাপড় তৈরি করতে কয়েকটি মেশিনের সাহায্য নিতে হবে আপনাকে। যেমন, গ্রাইন্ডার মিক্রাার পাপড় প্রেস মেশিন , ড্রায়িং মেশিন এবং প্যাকিং মেশিন । তবে ড্রায়িং এবং প্যাকিং মেশিন অত্যাবশ্যকীয় নয়।
কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, এই ব্যবসার জন্য ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যেই আপনি বিনিয়োগ করতে পারেন। আপনি কত বড় ব্যবসা করতে চাইছেন তার ওপর নির্ভর করছে। বেশি উপার্জন করতে চাইলে ভালো মেশিনের সাহায্য নিতে পারেন, এতে কম সময়ে অনেক বেশি পাপড় তৈরি করতে পারবেন এবং পরিশ্রমও কম হবে। উপার্জন এবং লাভ কেমন হয়, এতে উপার্জন বা লাভের কোনও সীমা নেই, নির্ভর করছে আপনি আপনার প্রোডাক্ট কতজনের কাছে পৌঁছতে পারছেন বা আকৃষ্ট করতে পারছেন। তবে প্রতি মাসে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা সহজেই রোজগার করতে পারবেন আপনি। আপনার পাপড়ের গুনগতমান এবং বাজারে চাহিদা আপনার রোজগার আরও বাড়িয়ে দিতে পারে ।
পাপড় তৈরী কারিগর রোমন বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী দুজনে মিলে বাড়ীতে পাপড় তৈরী করি এবং সেই পাপড় গুলো পাইকারী দরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার আয় করা যায়। এই পাপড় তৈরী ব্যবসায় যত বেশি টাকা ইনবেষ্ট করা যাবে ততই লাভের পরিমান বেশি হবে। সরকার যদি আমাদের এই ব্যবসার করার জন্য সহযোগীতা করতো তাহলে আরো বড় করে ব্যবসা করতে পারতাম।
গোয়ালন্দ উপজেলা সেনেটারী ইন্সেপেক্টর ও ( নিরাপদ খাদ্য পরির্দশক) মো. কামাল হোসেন বলেন, পাপড় তৈরী বা কিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়। কিন্তু মেশিনের তৈরী পাপড়ের চেয়ে হাতের তৈরী পাপড় ভালো যদি গুনুগতমান ঠিক থাকে ।