শহিদুল ইসলাম , গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় দিন দিন বেড়েই চলছে বিষাক্ত তামাকের চাষ। দেশী-বিদেশী সিগারেট কোম্পানি গুলো বেশী মুনাফার লোভ দেখিয়ে তামাক চাষে আগ্রহী করছে চাষিদের। চাষের জন্য অগ্রীম খরচ দেয়ায় তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছে চাষিরা।
উপজেলার উজানচর, ছোটভাকলা, দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন এবং পৌরসভায় দিনে দিনে ব্যাপক হারে তামাক চাষ বাড়ছে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, দীর্ঘদিন তামাক চাষে জমিতে অন্য ফসল চাষ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও তামাক চাষ করছে চাষিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলার পৌরসভাসহ চারটি ইউনিয়নে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩ হেক্টর, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ৫ হেক্টর এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ হেক্টর আবাদি জমিতে বিষাক্ত তামাক চাষ করা হয়েছে এর মধ্যে উজানচর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী। এ ছাড়া উপজেলার দূর্গম এলাকা গুলোতেও বর্তমানে কৃষকরা তামাক চাষে ঝুঁকছে।
উপজেলার এসব ইউনিয়ন গুলোতে সিগারেট কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত মুনাফার লোভ দেখিয়ে চাষিদের দিয়ে তামাক চাষ করিয়ে নিচ্ছে।
স্থানীয় তামাক চাষিরা জানান, জমিতে খাদ্য শষ্য রোপণ করে খুব বেশী লাভবান হতে পারিনি। প্রতি বিঘা জমিতে তামাক চাষে বীজ, সার, কীটনাশক ও পরিচর্যাসহ মোট ব্যয় হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এ টাকা সহজ শর্তে ব্যয় করেন সিগারেট কোম্পানি গুলো। দামও ভালো পাওয়া যায়, লোকসানের কোন সম্ভাবনা নেই। এ কারনেই চাষিরা তামাক চাষের দিকে ঝুকছেন বেশী।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, তামাক ও তামাকজাত পণ্য শরীরের জন্য ক্ষতিকর এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। তামাক থেকে জর্দা, গুল, বিড়ি, সিগারেটসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পণ্য তৈরী হয়। তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ব্যবহারের ফলে মুখে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি হয়ে ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট এ্যাটাক হওয়ার মত ঝুঁকিও থাকে। এছাড়াও যে এলাকায় তামাক চাষ হয়, তার আশেপাশের মানূষেরও শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম বলেন, তামাক চাষ ক্ষতিকর এটা কম-বেশী সবাই জানে। শুনেছি তামাক চাষিরা সিগারেট কোম্পানির সহযোগিতায় তামাক চাষ করে যাচ্ছে। ক্ষতিকর তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করার জন্য আমরা মাঠপর্যায়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি এবং কৃষকদের এর ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বুঝাচ্ছি। যাতে তারা তামাক চাষ বাদ দিয়ে খাদ্য শষ্য চাষে ফিরে আসেন।