নিজস্ব প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের আবাসিক পরিত্যক্ত হোস্টেলে এখন মাদকসেবীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। হোস্টেলের পরিত্যক্ত কক্ষ থেকে কিছুক্ষণ পরপরই বেরিয়ে আসছে মাদক সেবনকারীরা। মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বললেও বাস্তব চিত্র এখানে উল্টো।
কতিপয় ব্যক্তি বরং স্বার্থ হাসিল করতে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্তদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
হাত বাড়ালেই এখানে মেলে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবাসহ নানা ধরনের দেশি-বিদেশি মাদক। এমন পরিস্থিতিতেও শহর ও গ্রামঞ্চলেও মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে।
কলেজের পরিত্যক্ত হোস্টেলে বিকেল হলেই মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক বেচাকেনার পাশাপাশি সেবনও করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে কলেজ এলাকার সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া শহর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা মোটরসাইকেলযোগে সরকারি কলেজের পরিত্যক্ত হোস্টেলে এসে জড়ো হন। তারপর এখানে অবস্থান নিয়ে চলে মাদক বেচা-কেনা ও মাদক সেবনের আসর। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা এখন নিরাপদ হিসেবে পরিত্যক্ত হোস্টেলের এই স্থানকে বেছে নিয়েছেন।
নাম-প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বিকেল হলেই অনেকে এই রাস্তা দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে। কিন্তু মাদকসেবীদের জন্য তাও অনেকটা বন্ধ। পরিত্যক্ত হলটি যেন মাদকের ঘরে পরিণত হয়েছে। মাদক কারবারিদের ভয়ে এখানকার কেউ মুখ খুলতে পারছেন না। মাঝে মাঝে পুলিশ মাদক সেবনকারীদের ধাওয়া দেয়। কয়েকদিন পর আবারও একই চিত্র। পুলিশ-প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক সেবন ও ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তাই দ্রæত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানিয়েছেন তারা।
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মনজুর কাদির বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। এখানকার মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের গোড়াটা শক্ত, তাই কিছু করা সম্ভবই হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশের গাড়ি দেখলেই তারা পালিয়ে যায়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়া জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। সরকারি কলেজের মতো এমন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হোস্টেল পরিত্যক্ত থাকতেই পারে। তবে সেখানে মাদকসেবীদের চলাফেরা একেবারেই শুভকর নয়। দ্রæত কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।