Thursday , April 18 2024
You are here: Home / ব্রেকিং নিউজ / দুঃস্থ মানবসেবা সংস্থাতে চাকুরীর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
দুঃস্থ মানবসেবা সংস্থাতে চাকুরীর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

দুঃস্থ মানবসেবা সংস্থাতে চাকুরীর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

আবু হেনা মোস্তফা জামান, রাজশাহী:

রাজশাহীতে দুঃস্থ মানবসেবা সংস্থাতে চাকুরীর নামে সংস্থার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা জামানত নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নগরীর উপশহর এলাকার ৩ নম্বর সেক্টর,৭১,এ নং বাড়ির নিচতলা ৩ কক্ষ বিশিষ্ট বাসা ভাড়া নিয়ে অফিসটি পরিচালনা করছেন আবু বাক্কার নামে এক ব্যক্তি। যদিও এই প্রতিষ্ঠানের গেটে কোন সাইনবোর্ড নেই। ফলে বাহির থেকে বোঝার উপায় নেই এটি একটি দুঃস্থ মানবসেবা সংস্থার অফিস।

বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে সংস্থাটির অফিসে গিয়ে কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যারা নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী তারা সবাই টাকা জামানত দেওয়ার মাধ্যমে নাম মাত্র চাকুরী পেয়েছেন। এছাড়াও প্রতিদিন চাকুরী দেওয়ার নামে সাধারন সহজ সরল যুবক ও যুবতীদের কাছে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই ভূতুড়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক।

অথচ যে সংস্থার নামে টাকা জামানত নেয়া হচ্ছে সেই সংস্থার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। নেই সমাজ সেবা অফিসের অনুমোদন।

এমনকি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থার চেয়ারম্যান আবু বাক্কার তার একাডেমিক কোন শিক্ষাগত যোগ্যতাও প্রমাণ করতে পারেননি এবং সংস্থার কার্যক্রমের সুস্পষ্ট কোন ব্যাখ্যাও দিতে পারেন নি।

শুধুমাত্র তার কটু বুদ্ধির মাধ্যমে ও স্থানীয় একটি কুচক্রমহলের সাহায্য নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি স্বরূপ মানবকল্যাণের নামমাত্র একটি সংস্থা খুলে বসেছেন।

জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সাংবাদিকদের জানান, দুঃস্থ মানবসেবা সংস্থার নামে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। বর্তমানে তিনি ২৪ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে অফিসের কম্পিউটার অপারেটরের কাছে নিয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। হেল্প ডেস্কের এক যুবতীর কাছে নিয়েছে ২৪ হাজার টাকা। প্রহরীর কাছে নিয়েছেন ৭ হাজার টাকা। তবে তিনি এই টাকা ফেরত দিবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তার প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন হয়নি। তবে তিনি আশাবাদি তার প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন হবে।
অফিসের তিনজন কর্মচারী টাকা দেয়ার কথা স্বীকার  করে সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে বলেন, সংস্থাটির কোন কার্যক্রমের পরিকল্পনা ব্যতিতই শুধু টাকার বিনিময়ে সংস্থায় বিভিন্ন পদে চাকুরী দিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় চাকুরী দেয়ার পর বেতনের কথা বললেও এখন পর্যন্ত কর্মচারীদের সঠিকভাবে বেতন দেয়নি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বলে দাবি করেন তারা।
এ ব্যপারে সমাজ সেবা অফিসের একজন কর্মকর্তার সাথে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, দুঃস্থ মানবসেবা সংস্থার নামে কোন অনুমোদন হয়েছে বলে আমার জানা নাই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত কর্মচারী নিয়োগ দেয়া পুরোটাই অবৈধ এবং আইনের পরিপন্থি বলেও জানান তিনি।

এদিকে, উপ-শহর এলাকার শুভ নামের এক ব্যক্তিসহ একাধিক স্থানীয়রা জানান, পুরো রাজশাহী শহরজুড়ে যতগুলি আবাসিক এলাকা রয়েছে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এই রকম অনেক ভূতুড়ে প্রতিষ্ঠান জন্ম নেয়। আবার কিছুদিন পর রাতারাতি হারিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্থ হয় সাধারন নিম্ন আয়ের মানুষ।
তারা আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবগত করলে এইরকম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়না। আর পুলিশ আসলেও প্রথমে যে রকম হামকি ধামকি দেখা যায়। অজ্ঞাত কারনে পরে নিরব থাকে। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে তরুণ সমাজ প্রতারণার ফাঁদে পড়ে তাদের সহায় সম্বল হারাবে বলে মনে করছেন এলাকার মানুষ ও সচেতন নগরবাসী।
এ ব্যপারে অতিসত্ত¡র সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন নগরবাসী।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!