পুলক সরকার ॥
অপরিকল্পিত বসতবাড়ি, কলকারখানা ও দোকানপাট নির্মাণসহ নানা কারণে কুষ্টিয়ার খোকসাতে আংশকাজনক হারে কমে যাচ্ছে কৃষি জমি। পাশাপাশি বাড়ছে জনসংখ্যা। এভাবে চলতে থাকলে পরিবেশই শুধু ক্ষতিগ্রস্থ হবে না, ভবিষ্যতে ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনই সমন্বিত পরিকল্পনার দাবি তৃণমূলের কৃষকদের।
বহু বছর ধরেই দেশে কৃষি জমির পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমছে। তার প্রভাব পড়ছে ফসল উৎপাদনে। আবাদ যোগ্য জমির পরিমান কমে যাওয়ার পেছনে অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ, শিল্প কারখানা, দোকানপাট নির্মাণ, রাস্তাঘাট ও পুকুর খননসহ নানা কারণকেই দুষছেন তৃণমূলের কৃষকরা। সেই সঙ্গে জলাভূমি ভরাট ও বনভূমি ধ্বংস করার প্রক্রিয়া চলছে।
এভাবে চলতে থাকলে বসবাস উপযোগী পরিবেশই শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, নিকট-ভবিষ্যতে সমগ্র জনগোষ্ঠীই এক বিপর্যয়কর অবস্থায় গিয়ে পড়বে। এখনই মাথাপিছু আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ অতি সামান্য। তারপরও যদি কৃষি জমি এমন দ্রুত হারে কমতে থাকে, তাহলে বিপুল জনসংখ্যার খাদ্যের জোগান দেয়া এক সময় কষ্টকর নয়, রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এই ভূমি থেকে আমরা খাদ্য, বস্ত্র (তুলা), বৃক্ষ, বাসস্থান, রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, শিল্প, খনি ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ সহ জীবন রক্ষাকারী ঔষধের উপাদান সমূহ পেয়ে থাকি। মূল্যবান এই ভূ-সম্পদ আজ নানা ভাবে মারাত্মক ভাবে অবক্ষয়ের সম্মুখীন হয়ে পরছে।
বাড়ছে মানুষ, একই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাদের জীবন জীবিকার চাহিদা। চাহিদা ও প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে মানুষ ভূমির অপরিকল্পিত ও অপরিমিত ব্যবহার করছে। ফলশ্রতিতে ভূমির অপব্যবহার আজ উপজেলার সর্বত্র দৃশ্যমান হয়ে পড়েছে।
খোকসা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা জানান, উপজেলায় কৃষি জমি হ্রাস রোধ করতে না পারলে কৃষি উৎপাদনে ব্যাপক বিপর্যয় নেমে আসবে। কৃষি জমি হ্রাস রোধ করতে না পারলে কৃষি উৎপাদন কমিয়ে উপজেলার খাদ্য ঘাটতি চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে। তিনি মনে করেন অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি, অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ করা জরুরী।
এ ব্যাপারে খোকসা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসাহক আলী জানান, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।