কুষ্টিয়া অফিস॥
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের ওমরপুর গাছেরদাইড় গ্রামের ৮টি ভূমিহীন পরিবার সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে আসছে। আনুমানিক ৫৫বছর পূর্বে এই সরকারি খাস জমিতে এসে ৩টি পরিবার বসবাস শুরু করলেও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৮টি পরিবারের রূপ নিয়েছে। পাশাপাশি অবশিষ্ট সরকারি খাস জমিতে (ফসলী) চাষাবাদ করে কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করে আসছে তারা। বেঁচে থাকার শেষ সম্বল দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসা সরকারি খাস জমি নিজেদের অনুকূলে বরাদ্দ চান তারা।
সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, জহুরুল ইসলাম ও মোমেনা খাতুন দম্পতি, বজলুর রহমান ও মেরিনা খাতুন দম্পতি, ছানোয়ার হোসেন ও পারভিনা খাতুন দম্পতি, মহাবুল হক ও তসলিমা খাতুন দম্পতি, শাহাবুল হক ও জেসমিন নাহার জুই দম্পতি, জামিরুল ইসলাম ও সোনালী খাতুন দম্পতি, সিরাজুল ইসলাম ও তহুরা খাতুন দম্পতি, আয়নাল হক ও ফরিদা খাতুন দম্পতি তাদের ছেলে মেয়ে নাতি পুতি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছে। সব মিলিয়ে ৮টি পরিবারের আনুমানিক শতাধিক মানুষ এই খাস জমিতে বসবাস করছে। শিক্ষার আলো এই পরিবারগুলোর মাঝে তেমন ভাবে না ছড়ানোর কারণে তারা দীর্ঘদিন ধরে খাস জমিতে বসবাস করলেও আজ পর্যন্ত নিজেদের অনুকূলে বরাদ্দ নিতে পারেনি। কয়েক মাস পূর্বে কুষ্টিয়া জেলার বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের সহায়তায় বসবাসকৃত ৮টি পরিবার তাদের দখলে থাকা খাস জমি নিজেদের অনুকূলে বরাদ্দ নেওয়ার জন্য আবেদন ফর্ম প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ পূরণ করলেও বাধ্যতামূলক থাকা চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন পত্র নিতে পারেননি তারা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম এই ৮টি পরিবারকে প্রত্যয়ন পত্র দেবার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। পরিবারগুলো টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম তাদেরকে প্রত্যয়নপত্র দেননি।
হঠাৎ গত ১০ জানুয়ারি বিকাল ৩ টার সময় তালবাড়িয়া ভূমি অফিসের তহশীলদার মৌখিকভাবে পরিবারগুলোকে বলেন- “দৌলতপুর উপজেলা ভূমি অফিসার ভূমিহীন পরিবারগুলোকে তাদের দখলে থাকা সরকারি জমির উপর নির্মিত ঘরবাড়ী ও অন্যান্য স্থাপনা গুলো ভেঙ্গে নিয়ে চলে যেতে বলেছে।” এরপর থেকে পরিবারগুলো শেষ সম্বল মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু বাঁচাতে সরকারের কর্তাব্যক্তি, স্থানীয় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দ্বারস্থ হচ্ছেন। ইতিমধ্যে স্থানীয় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জুলমত সাহেব ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাদেরকে আশ্বাস প্রদান করে সরকারের দপ্তরগুলোর সাথে যোগাযোগ করছেন তারা। পরিবারগুলো তাদের শেষ সম্বল মাথা গোঁজার ঠাঁই দখলে থাকা সরকারি খাস জমি গুলো নিজেদের অনুকূলে বরাদ্দ দিতে মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফরোজ শাহীন খসরুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পরিবারগুলো আবেদন করলে তাদেরকে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।