Tuesday , February 11 2025
You are here: Home / অর্থনীতি / বগুড়ায় বিক্রি বেড়েছে ফরমালিন মুক্ত তাল শাঁস
বগুড়ায় বিক্রি বেড়েছে ফরমালিন মুক্ত তাল শাঁস

বগুড়ায় বিক্রি বেড়েছে ফরমালিন মুক্ত তাল শাঁস

এমদাদুল হক, বগুড়া
এখন চলছে বাংলা মাস জৈষ্ঠ্য। এই মাসে গ্রাম বাংলার বাহারী ফল আম,জাম, কাঁঠাল, লিছু, তালসহ প্রায় কুড়ি রকমের ফল পাওয়া যায়। এ কারনে জৈষ্ঠ্য মাসকে মধু মাস বলা হয়।
এই মাসে গ্রামীণ ঐতিহ্য তালের শাঁস বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বাজারে উঠেছে মৌসুমী ফল হিসাবে। তালের ভিতরে থাকা শাঁস মিষ্টি ও খুবই সুস্বাদু। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায় আর ১টি তাল ১০ টাকায় থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করছে। তবে বছরের কিছু সময়ে এ ফল পাওয়া যায় বলে দামে বেশি হলেও ক্রেতারা কিনছেন আগ্রহের সাথে।
বগুড়া শহরের মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের সামনে ৫০০ পিস তাল নিয়ে বিক্রিতে বসেছেন সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন ৫ টাকা পিস চোখ বিক্রি করছি ৫০০ তাল সন্ধার মধ্যই শেষ হয়ে যাবে। প্রত্যক দিন দুপুর থেকে সন্ধা পর্যন্ত বিক্রি করি। ভালোই ইনকাম হয়। তাল শক্ত হয়ে গেলে খুব একটা খেতে চায় না।
রফিক, সাহিন, টুকু নামের ক্রেতারা জানান, আমরা গ্রামে থাকতে অনেক খেয়েছি কিন্তু শহরে থাকার ফলে তাল তেমন খাওয়া হয় না। রাস্তার পাশে তাল বিক্রি করতে দেখে পরিবারের সবার জন্য কিনলাম। তাল শাঁস খেতে দারুন লাগে।
সরকারি আজিজুল হক কলেজের পুরাতন ভবনের সামনে বটতলায় তালের শাঁস বিক্রি করছেন তারা মিয়া। ভরা মৌসুমে তাল বিক্রি করে সংসার ভালোই চলছে তার। তিনি জানান পরিবারের খরচ মেটান এই ব্যবসা করে।
শহরের কাঁঠালতলায় রাজু, মালিক, খোরশেদ বাড়ি থেকে তাল শাঁস কেটে নিয়ে এসে বিক্রি করছে ৫ টাকা পিস হিসেবে। খান্দার পাথমিক বিদালয়ের সামনেও দেখা যায় মোজাফফর নামের এক ব্যক্তি তাল শাঁস বিক্রি করছে ৫ টাকা করে। পৌরসভা এলাকায় মেইন মেইন পয়েন্টে দেখা যায় মৌসুমি ফল তাল বিক্রি করছে।
শেরপুর উপজেলায় সকাল বাজার এবং তালতোলা বাজারের তাল শাঁস বিক্রেতা মোঃ সোহান ও জোগায় চন্দ্র মহন্ত বলেন তালের শাঁস হিসেবে কম মানুষই একে চেনে। অনেকেই বলে তাল, নয়তো বলে ডাব। প্রতি পিস বিক্রি করি ১০ থেকে ১৫- টাকায়। প্রতিদিন প্রায় ২-৩শ’ বিক্রি হয়। বাজারে লোক সমাগম বেশি হলে আরো বেশি বিক্রি হয়ে থাকে।
ধনুট উপজেলায় তাল শাঁস বিক্রেতা আপেল মাহমুদ বলেন আমি কয়েক বছর ধরেই ব্যবসা করছি প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০শ তাল বিক্রি করি প্রত্যেকটা তালের দাম নেই ৮ থেকেে ১০ টাকা তবে তালের গাাছ এখন দিন দিন কমে যাচ্ছে এই কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করতে হয়।
কাহালু উপজেলায় তাল শাঁস বিক্রেতা মানিক সরকার বলেন, তাল যখন ছোট বা কাঁচা থাকে তখন বাজারে এটা পানি তাল হিসেবেই বিক্রি হয়। কেউ বলে তাল শাঁস আবার কেউ বলে তালের চোখ, কেউ বলে তালকুরা।
নন্দীগ্রাম উপজেলায় তালশাঁস বিক্রেতা মোঃ তালেব বলেন, আমাদের উপজেলার কয়েকটি বাজারসহ বিভিন্ন হাটে ও এই শাঁস বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ৩ থেকে ৫শ’ তাল বিক্রি করি। প্রতিটি তালের দাম ১০ টাকা করে রাখা হচ্ছে। তবে খুচরা কিনলে তালের একটি করে শাঁস (চোখ) ৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলায় তাল শাঁস বিক্রেতা বলেন প্রতিটি তালের ভিতর দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে এবং প্রতিটি তাল ৮ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে গরম পড়লে তালের শাঁস অনেক বেশী বিক্রি হয়। প্রতি বছর আমি এ মৌসুমে তালের শাঁস বিক্রি করে থাকি।
তাল শাঁস কিনতে আসা তাসলিমা সুমাইয়া আক্তার , জাহাঙ্গীর হোসেনসহ কয়েকজন জানান, অনেক ফল যখন ফরমালিনের বিষে নীল, তখন তালের শাঁসে ফরমালিনের ছোয়া লাগেনি। এ জন্য প্রতি বছর আমরা ও আমাদের পরিবারের সকলেই খায়। এগুলো খেতে নরম ও সুস্বাধু এবং শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর।
বিক্রেতারা জানায়, আগামী আষাঢ়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত উপজেলায় তাল শাঁস বিক্রি হতে পারে। এরপর তালের শাঁস শক্ত হতে শুরু করবে। তবে শক্ত শাঁসের তালের বাজার‌ও অনেক ভালো।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!