আমিরুজ্জামান বাবু, সাতক্ষীরা
সুন্দরবনের জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। কিন্তু নদীর ওপারে যে রয়েছেন প্রেমিক। তাই বাঘ-কুমিরের ভয়েও পিছিয়ে যাননি বাংলাদেশের সাতক্ষীরার বাসিন্দা কৃষ্ণা মন্ডল। পশ্চিমবঙ্গে থাকা প্রেমিক অভীক মন্ডলকে বিয়ে করতে একঘণ্টা ধরে সুন্দরবনের মাতলা নদী সাঁতরে ভারতে এসেছিলেন। কলকাতার কালীঘাটে মা কালির মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করে ভালোবাসার মানুষকে জীবনসঙ্গী করে সংসারও বেঁধেছিলেন। কিন্তু প্রেমের জন্য তার এই জীবনপণ করার গল্পই কাল হলো! শেষ পর্যন্ত সোমবার (৩১ মে) বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে কৃষ্ণা মন্ডলকে কলকাতার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাস ছয়েক আগে নরেন্দ্রপুরের রানিয়ার বাসিন্দা যুবক অভীক মন্ডলের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় বাংলাদেশের সাতক্ষীরার বাসিন্দা কৃষ্ণার। সেই আলাপ প্রেমে পরিণত হয়। অভীককেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন কৃষ্ণা। কিন্তু ভারতে আসার জন্য পাসপোর্ট বা ভিসা ছিল না তার কাছে। তাই বাংলাদেশের সুন্দরবনের জঙ্গলঘেরা পথে নদী পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় ঢোকার পরিকল্পনা করেন ওই তরুণী। দিন কয়েক আগে বিপদে ভরা জঙ্গল পথ পেরিয়ে নেমে পড়েন মাতলা নদীতে। বাঘ-কুমিরের মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও সেসব বিপদের তোয়াক্কা না করেই একঘণ্টা নদী সাঁতরে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার কৈখালীতে ঢুকে পড়েন কৃষ্ণা। সেখান থেকে তাকে গাড়িতে করে নিয়ে আসেন প্রেমিক। প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করে কালীঘাট মন্দিরে গিয়ে বিয়েও সেরে ফেলেন দুজন। পুলিশ সূত্রে খবর, চার দিন আগে ভারতে ঢুকেছিলেন কৃষ্ণা।
বিয়ের পর সুখেই সংসার করছিলেন দুজনে। কিন্তু প্রেমের জন্য কৃষ্ণার এই সাহসিকতার কাহিনী লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে। তরুণীর নদী পেরিয়ে ভারতে ঢোকার এই গল্প পুলিশের কানে পৌঁছতেও দেরি হয়নি। এরপরই সোমবার রানিয়া এলাকায় হানা দেয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় কৃষ্ণাকে। গতকালই তাকে আদালতে পেশ করে পুলিশ।