যশোর প্রতিনিধি: প্রথমে দেখে মনে হতে পারে, ধানগুলো বুঝি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে! ধানের এমন বর্ণ স্থানীয় কৃষকদের মাঝে তৈরি করেছে নানা কৌতূহল। বস্তুত এটি উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের আন্দোলপোতা গ্রামে প্রথমবারের মতো আবাদ হচ্ছে ক্যানসার প্রতিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুষ্টিসমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল ধান। ভিয়েতনামের ব্ল্যাক রাইস (কালো ধান) জাতের ধান চাষ করেছেন আলামিন গাজী। তার এ ধান চাষ দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অন্য কৃষকেরা। এ ধরনের ধান চাষে তেমন কোনো রোগবালাই না থাকায় ভালো ফলনের আশা কৃষক আলামিনের।
এমন জাতের ধান চাষের বিষয়ে জানতে চাইলে আলামিন গাজী বলেন, ‘কৃষক পরিবারের সন্তান আমি। ছোট থেকেই কৃষি কাজে আগ্রহী। বর্তমান ব্যবসার পাশাপাশি কয়েক মৌসুমে ধান চাষ করছি। গত বছর ইউটিউবে কালো বর্ণের ধানের ভিডিও দেখে বগুড়া থেকে তিন কেজি বীজ সংগ্রহ করে বীজতলা তৈরি করে চারা উৎপাদন করি। পরে ২০ শতক (১২ কাঠা) জমিতে চাষ করেছি।’
আলামিন বলেন, ‘প্রথমে শখের বশে পরীক্ষামূলক আবাদ করি। প্রথমে এলাকার চাষিরা নানা ঝুঁকির কথা বললেও ফলন দেখে ভালো বা উচ্চ ফলনের আশা দেখছি। তাছাড়া অন্য ধান চাষের তুলনায় ব্ল্যাক রাইসে রোগবালাই ও খরচ কম হওয়ার ফলে এলাকার অন্য চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। আশা করছি বাজারে চাহিদা থাকলে ভালো লাভবান হওয়া সম্ভব।’
এলাকায় নতুন জাতের ধান চাষের উদ্ভব সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, ‘প্রথমে যখন এ ধান রোপণ করা হয়েছে; তখন দেখেছি ধানের রংটা লালচে ধরনের। পরিণত ধানের বর্ণ অনেকটা এমন যে, সাধারণত ধান পুড়ে গেলে যে কালচে রং হয়, সে রং ধারণ করে। প্রথমে ভেবেছিলাম, ধানগুলো হয়তো পুড়ে গেছে। এখন দেখছি রংটাই এমন। শুনেছি এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। দামও নাকি অনেক বেশি। আগামীতে আমরাও লাগাবো এ ধান। এর জন্য কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’
ঝিকরগাছা উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন জাতের এ ব্ল্যাক রাইস চাষের বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি। ধান চাষির সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে মাঠ পরিদর্শনের পর ফলন ও সার্বিক বিষয়ে জানানো যাবে।’