Monday , June 16 2025
You are here: Home / চট্টগ্রাম ও সিলেট / বালু উত্তোলনেই সেতুর চরম পরিণতি দুর্ভোগে তিন উপজেলার মানুষ
বালু উত্তোলনেই সেতুর চরম পরিণতি দুর্ভোগে তিন উপজেলার মানুষ

বালু উত্তোলনেই সেতুর চরম পরিণতি দুর্ভোগে তিন উপজেলার মানুষ

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়কের চৈত্রঘাট ক্ষতিগ্রস্ত ধলাই নদীর সেতু ধ্বসে যাওয়ায় গত দশদিন ধরে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে মৌলভীবাজার-শমশেরনগর-চাতলাপুর চেকপোস্ট সড়কেরও যোগাযোগ থাকার ফলে বিকল্প সড়কে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার হাজারো মানুষ। এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর ধলাই নদীর উপর ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির মধ্যবর্তী পিলার আকস্মিকভাবে দেবে গেলে সড়কে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
স্থানীয় ও সওজ সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, ২৬ সেপ্টেম্বর আকস্মিকভাবে ধলাই সেতুর মাঝ বরাবর পিলার দেবে যায়। এতে সেতুটি ধসে যায়। যান চলাচল সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। পরে ঐদিন সন্ধ্যায় সওজ মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন স্বাক্ষরিত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিকল্প হিসেবে মুন্সীবাজার-মৃর্তিঙ্গা চা-বাগান টু ভৈরববাজার সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়। যান চলাচল নিষিদ্ধ সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তির অনুলিপি বিভিন্ন দপ্তরেও পাঠানো হয়।
এদিকে বিগত প্রায় আট মাস আগে চৈত্রঘাট এলাকায় ধলাই সেতু প্রতিরক্ষা বাঁধ দেবে যাওয়ার সাথে সাথে পাকা আরসিসি খুঁটিও দেবে যায়। এরপর সওজ পরপর দুইবার এ পথে যান চলাচল বন্ধ রেখে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর সাথে পাটাতন যুক্ত করে একটি বেইলি সেতু স্থাপন করে। অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলে ও সেতুর খুব কাছ থেকে বালু উত্তোলন করায় এখন আবার সেতুর খুঁটি দেবে গেছে। চৈত্রঘাট এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ধলাই সেতুর মধ্যবর্তী পিলার দেবে যাওয়ার ঘটনায় প্রতিনিয়ত ড্রেজার মেশিন দিয়ে সেতুর কাছ থেকে নদীর বালু উত্তোলন করাকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা এবং প্রকৌশলী একথা স্বীকার করেন ও তিনি এবিষয়ে ডিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানান। এ সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার বাসিন্দাসহ হাজার হাজার মানুষ। কমলগঞ্জ থেকে জেলা সদর মৌলভীবাজার যাতায়াতের এটিই সরাসরি সড়ক। তাছাড়া মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে শমশেরনগর-চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে যোগাযোগেরও একমাত্র সড়ক এটি।
সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় অফিসগামী লোকজন, শিক্ষার্থী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, অসুস্থ রোগীসহ সর্বস্তরের মানুষকে বিকল্প পথে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে ভাঙাচুরা রাস্তা পেরিয়ে মৌলভীবাজার যেতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত সময় ও ভাড়া গুনতে হচ্ছে। সড়কের নিয়মিত যাত্রী মোহাম্মদ নাদিম, কয়ছর মিয়া বলেন, ‘সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত অনেকদিন ধরেই। সড়ক ও জনপথ বিভাগ আগেই কাজ শুরু করতে পারতো। এখন পুরোটা ধ্বসে যাওয়ায় সড়ক বন্ধ হয়ে গেল। আমাদের যাত্রী সাধারণ বিকল্প পথে ঘুরে সময় ব্যয় করে ও বাড়তি ভাড়া গুণে যেতে হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন এর সাথে আজ শুক্রবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘সেতুটি অনেক পুরাতন। এর আগে হঠাৎ করে মাটি ধসে যাওয়ার কারণে সেতুর অ্যাপ্রোচ মেরামত করা হয়। গত সপ্তাহে হঠাৎ সেতুটির মধ্যবর্তী পিলার আকস্মিকভাবে দেবে যায়। তাই জরুরি ভিত্তিতে এ সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে সংস্কার কাজের উদ্যোগ জন্য এক্সপার্টদের দ্বারা করানোর জন্য লোক চলে আসছে আজ কাজের শুরু হবার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে হয়নি। তবে আগামী কাল থেকে কাজ শুরু হয়ে আগামী মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করে চালু করার আশ্বাস প্রদান করেন।’ এবং এর পাশাপাশি অন্য আরেকটি ব্রিজ তৈরির প্রকল্প কাজ হাতে নেয়া হয়েছে কিন্তু চলাচলের জন্য পুরোনাটা চলাচল উপযোগী হলেই নতুন কাজ শুরু করবেন বলে জানান তিনি।

About দৈনিক সময়ের কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top
error: Content is protected !!