ভারত থেকে সাজ্জাদ নামের এক ব্যক্তি দুবাইয়ে এক প্রবাসীকে ফোন করে তার বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি ফ্ল্যাট বা এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা দাবির পর মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) ভোরে দুবাই প্রবাসীর চট্টগ্রামের বাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার ভোরে বন্দরনগরীর পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান।
ওই বাড়ির মালিক দুই ভাই নুরুল আবসার ও নুরুল আক্কাসবহু বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকেন। তবে আক্কাস গত কয়েক মাস ধরে চট্টগ্রামে আছেন।
আক্কাস বলেন, নগরীর চান্দগাঁও হাজীরপুল এলাকায় আমাদের পৈত্রিক জমিতে গত আট মাস ধরে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। গতকাল (সোমবার) বিকালে নগরীর আলোচিত সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবরের নাম করে এক লোক দুবাইয়ে আমার বড় ভাইকে ফোন দিয়ে বলে, ভারত থেকে সাজ্জাদ ভাই ফোন করবে, ফোন যেন উনি রিসিভ করেন।
তিনি বলেন, পরে সাজ্জাদের পরিচয় দিয়ে একজন লোক ভারতের এক নম্বর থেকে আমার বড় ভাইকে ফোন করে। ফোন করা ওই ব্যক্তি আমাদের ভবন থেকে একটি ফ্ল্যাট না হয় এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে।
আক্কাস বলেন, ওই ফোন পাওয়ার পর আমার ভাই আবসার দুবাই থেকে আমাকে বিষয়টি জানায়। কিন্তু ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আমি আর আর পুলিশকে কিছু জানাতে পারেননি।
ভেবেছিলাম সকালে গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানাব। তার আগেই ভোরে আমাদের বাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হল।
বাসার নিরাপত্তাকর্মীর বরাত দিয়ে আক্কাস জানান, মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে একটি অটোরিকশায় করে কয়েকজন যুবক এসে তাদের তিন তলার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। পরে তারা দুবাইয়ে আমার ভাইকে ফোন করে বোমা মারার বিষয়টি জানায়। পাশাপাশি আমাকে হুমকি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠায়।
এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি কাশেম বলেন, বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। ভবন নির্মাণ কাজে কেউ বাধা দেয়নি। কিন্তু ভারতীয় নম্বর থেকে দুবাইতে ফোন করেছে। এর পেছনে কারা জড়িত আমরা জানার চেষ্টা করছি।
২০০০ সালে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ আটজনকে গুলি করে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাজ্জাদ হোসেন খান বহু বছর ধরে পলাতক। বর্তমানে তিনি ভারতের কারাগারে বন্দি আছেন বলে বিভিন্ন সময়ে খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে।
পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম নগরীতে সাজ্জাদ এবং তার সহযোগী সরোয়ার ও ম্যাক্সনের নাম দিয়ে ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির ঘটনা আগেও ঘটেছে। সে সময়ও বাড়ি গিয়ে পেট্রোল বোমা হামলা কিংবা গুলি করার মত ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামি থানার নয়াহাট এলাকায় এক গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবির পর তার বাড়িতে পেট্রোলে বোমা ছোড়া হয়েছিল। পাশাপাশি আরেক ব্যবসায়ীর কাছে সাজ্জাদের পরিচয়ে ফোন করে চাঁদা দাবি করা হয়েছিল।
ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদের সহযোগী সরোয়ারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার আগে আগেই তিনি দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিলেন।