লালনের কথা সহজ। সরল মানুষ হিসেবে তার আধ্যাত্মিক শক্তিমত্তা বিশ্বজুড়ে জাত-পাত বিভেদ করে না। পাশেই কাঙাল ছিল, তার কথা একটু দেরিতে বুঝত মানুষ। আজও পৃথিবীর সব থেকে জটিল ও দুর্ভেদ্য বলে বিবেচিত মানুষ, তার চরিত্রে নানা গুণের মিশ্রন। এই মানুষ ভাল, এই মানুষ মন্দ। বার বার চরিত্র পাল্টায়, আজকের বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসও একই রকম। মানুষের সঙ্গে করোনাভাইরাসেরও চরিত্রের ঠিক নেই, তার জিন আবিস্কার ও ওষুধ বা প্রতিষেধকের জন্য জন্য সে কারণে মানুষকে হিমহিম খেতে হচ্ছে।
সাপ-বাঘ বোঝা যায়, তাদের হিংস্রতা প্রতিরোধের সুযোগ থাকে, কিন্তু মোনালিসার মত দুর্বোধ্য হাসির পেছনে পূর্ণিমার রাতকে ঝলসানো রুটি ভাবে কেউ, কারও কাছে এক হাতে রণতূর্জ, অন্য হাতে বাঁশি।
খুব অসময়ে রাষ্ট্রযন্ত্রও বিপাকে, কোটিপতি নেতাও এখানে রক্তের দোষে হতদরিদ্র সাজতে দ্বিধা করে না। নিজের পেট ভরে গেলে ত্রাণের চাল পুকুরে, ক্যানেলে ফেলবে কিন্তু অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের উপকারে লাগাবে না। ভুলে ভরা সিদ্ধান্তে রাষ্ট্র অস্থির, একবার ছাড়ে, একবার ধরে- মাঝে বেহাতি হয়ে চরিত্র হারায়, করোনা ছুয়ে ফেলে জনগণকে। তেলো মাথায় আবারও তেল ঢালার রসালো জায়গায় বসে রাষ্ট্র প্রণোদনাসহ নানা উপহার তুলে দিচ্ছে কোটিপতিদের ডেরায়, আর অভুক্ত জনগণ লাইনে দাঁড়িয়ে মাথা চুলকাচ্ছে।
এখানে একটা কলা দিয়ে একডজন নেতা হাসিমুখে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায়। প্রচারণা পেতে নেতা-ব্যবসায়ী দানের তিনগুন মিডিয়া কর্মিদের হাতে দেয়। চমৎকার সেজেগুজে ছবি তোলে, কড়া লিপস্টিক, বাহারী পোশাকে তারা ধানের জমিতে নামতেও দ্বিধা করে না।
সময় যাচ্ছে চলে, শক্তহাতে নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে সবখানে। তখন চেষ্টা করলেও আর সাধন হবে না।