নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ
জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ ইব্রাহীমের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় আলোচনা সভা, সেবা সপ্তাহ ও দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ডায়াবেটিক হাসপাতালে এ অনুষ্ঠান হয়। টেলিকনফারেন্সে মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট থেকে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান লাল্টু। অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান টর্লিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। প্রধান বক্তা ছিলেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রখ্যাত সার্জন ডাঃ মুসতানজিদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রখ্যাত আবু তৈয়ব বাদশা। বক্তব্য রাখেন অত্র হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডাঃ লাল মহম্মদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতাউর রহমান আতা বলেন, ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের সেবায়। তার আদর্শ ও লক্ষ্য ছিল- কোনো ডায়াবেটিক রোগী দরিদ্র হলেও বিনা চিকিৎসায়, অনাহারে, বেকার অবস্থায় মারা যাবে না। তিনি এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। তিনি আরো বলেন, ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ ইব্রাহীম যে কাজটি করেছেন তা এদেশের আপামর মানুষ আজীবন সুফল ভোগ করবে। তিনি চিকিৎসা জগতে বাংলাদেশের গর্ব। বাংলাদেশের ডায়বেটিক রোগীরা তার অবদানের জন্য ডাঃ ইব্রাহীমকে আজীবন স্মরণ করবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে প্রফেসর ডাঃ মুসতানজিদ বলেন, ডাঃ ইব্রাহীমের বাণী ছিলো ঃ ‘আমাদেরকে সেবা করার সুযোগ দেয়ার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’ ‘কোনো ডায়াবেটিক রোগী গরীব হলেও বিনা চিকিৎসায়, অনাহারে এবং বেকার অবস্থায় মারা যাবে না।’ ‘জাতি, ধর্ম, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বিন্দুমাত্র ভেদাভেদ না করে সব রোগীকে সমবেদনার সাথে সেবা করাই আমাদের আদর্শ।’ তার বাণী সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই তার আত্মা শান্তি পাবে। তিনি আরো বলেন, জাতীয় অধ্যাপক মরহুম ডাঃ ইব্রাহীম ছিলেন একজন প্রকৃত সমাজ সেবক ও মহান ব্যক্তিত্ব। তিনি স্মরণীয় থাকার মতো সমাজসেবক ছিলেন। এই ক্ষণজন্মা মানুষের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ গুলো আমাদেরকে করতে হবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বক্তব্যে মতিউর রহমান লাল্টু বলেন, এ হাসপাতাল বিগত প্রায় তিন দশক যাবত ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত সেবা প্রদান করে চলেছে, এই সেবা করোনাকালীন সময়ে থেমে খাকেনি। তিনি বলেন, বর্তমানে এ হাসপাতালের নিবন্ধিত রোগীর সংখ্যা ৮০ হাজারেরও অধিক। নিয়মিত চিকিৎসা নেন অন্তত ৪শ রোগী। এছাড়া এই হাসপাতালে দুস্থ, গরীব, প্রতিবন্ধি রোগীদের চিকিৎসা সেবা বিনামূল্যে দেওয়া হয়।
সভাপতির বক্তব্যে রাখেন কুষ্টিয়া ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান টর্লিন বলেন, ‘শৃঙ্খলাই জীবন’ এই মূলমন্ত্র হৃদয়ে ধারণ করে জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। আর ডায়াবেটিক চিকিৎসা সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অধিভুক্ত সমিতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ডায়াবেটিক সমিতি। অনুষ্ঠান শেষে মরহুম ডাঃ ইব্রাহিম এবং প্রয়াত কুষ্টিয়া ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান রুহের মাগফেরাত কামনা কওে দোয়া করা হয়। দোয়া এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক আফম নুরুল কাদের।
উল্লেখ, প্রতি বছর ৬ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। ১৯৮৯ সালের এ দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।