স্টাফ রিপোর্টারঃ এযেন এক উদোর পিন্ডি বুধোর ঘারে পড়ার উপক্রম। চুরি যাওয়া মাল উদ্ধারে গাড়ী রেখে ড্রাইভার চলে যাওয়ায় এখন বিপাকে পড়তে বসেছে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দী উপজেলার ১নং ইসলামপুরের ৯নং ওয়ার্ডের মোঃ হাসান শেখের ছেলে দীর্ঘদিনের শুকনা মরিচ ব্যাবসায়ী মোঃ আবু বক্কার শেখ।
থানায় করি সাথারন ডায়রী কপি ও বক্কারের ভাষ্য থেকে জানা যায়, গত মাসের ১৮ তারিখে উত্তরবঙ্গের বগুড়া রাজা বাজারের মেসার্স শাহিন ভান্ডারের নিকট থেকে ১৫০ বস্তা শুকনা মরিচ ক্রয় করে। শাহিন ভান্ডারের মালিক মোঃ খোকন বগুড়া আন্তঃজেলা ট্রাক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন যার রেজিঃ নং বি ১৭৭৮এর মাধ্যমে যশোর ট- ১১-০৩২৮ নাম্বারের ট্রাকটি ভাড়া করে ট্রান্সপোর্ট মেমো রশিদ নং ইংরাজীতে 204587 এর স্লিপে ড্রাইভার খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশপাড়া এলাকার মোঃ ইউসুফ খান এর ছেলে মোঃ বিপ্লব খানকে ১৫০ বস্তা শুকনা মরিচ বগুড়া থেকে রাজবাড়ী ভাড়া ৮৫০০ টাকা নির্ধারন করে ৩০০০ টাকা অগ্রীম প্রদান করা হয়। ড্রাইভার বিপ্লব খান গত মাসের ১৯ তারিখ ভোর ৪টার দিকে বহরপুর বাজারে এসে ব্যাবসায়ী আবু বক্কারকে ফোনে ডেকে আনে। মচিচ গাড়ী থেকে নামার পর গুনে দেখা যায় ১৫০ বস্তার স্থলে ১২৯ বস্তা ২১ বস্তা কম। এ বিষয়ে ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলে সে এলোমেলো কথা বলতে শুরু করে। ২১ বস্তা শুকনা মরিচের মূল্য ২,৫২,৫৪৫ টাকা। বগুড়া ট্রান্সপোর্ট এবং আড়ৎ মালিকের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ড্রাইভার আস্বশ্ত করে আমি গাড়ী রেখে যাচ্ছি। যেহেতু একটি অঘটন হয়েছে এর সমাধান টানতে হবে। এপ্রেক্ষিতে ড্রাইভারের লিখিত নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অদ্যাবধী ড্রাইভার বা মালিক পক্ষের কেউ আসেনি। গাড়ীটি বহরপুরে পড়ে রয়েছে। এ বিষয়ে গাড়ী মালিক উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে পারেন বলে জানায় মরিচের মালিক আবু বক্কার শেখ। মরিচের ব্যাবসায়ী আবু বক্কার কোন উপায় না দেখে গত ০৬ ডিসেম্বর বালিয়াকান্দী থানায় একটি সাধারন ডায়রী করেন নাম্বার ২৩২।
বগুড়া আন্তঃ জেলা ট্রাক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের স্লিপে দেখা যায় তারা দায়সাড়া একটি স্লিপ প্রদান করেছেন। সেখানে ছাপানো আকাড়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার, শ্রমিক সদস্য নাম্বার এর কলাম থাকলেও তা খালী পাওয়া যায়। সেখানে ড্রাইভারের মোবাইল নাম্বার ০১৬২৪-০৯৬৯১২ নাম্বারটি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যা বর্তমানে বন্ধ পাওয়া যায়। যখন ড্রাইভার গাড়ী ফেলে চলে গেছেন গাড়ীর মালিক ড্রাইভারকে আসামী করে মামলা করতে পারেন। সে চুরির সাথে সম্পৃক্ত কিনা তা শুধু ড্রাইভার ও হেলপারকে পাওয়া গেলেই বলা যাবে। এর জন্য ব্যাবসায়ী দায়ী হতে পারেন না। একজন মালিক যখন তার গাড়ীটি কোনো ড্রাইভারের হাতে দিয়েছেন তার ভালো মন্দোটা তিনিই বলতে পারেন। আর ড্রাইভার তছরুপ হওয়া মাল উদ্ধার অথবা জরিমানা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে এখান থেকে চলে গেছে বলে জানা যায়।
বগুড়ার রাজাবাজারের মেসার্স শাহিন ভান্ডারের সাথে আলাপ করতে তাদের মুঠোফোন নাম্বার ০১৮৬৭১২৪৭৭৪ নাম্বারে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
গতকাল দুপুরে বহরপুর বাজার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম বিশ্বাস কথা বলেন মেসার্স শাহিন ভান্ডারের মালিক খোকন এর সাথে। তাকে বলেন, বহরপুর বাজারে পড়ে থাকা ট্রাক নাম্বার যশোর ট -১১-০৩২৮ গাড়ীটি আপনার আড়ৎ থেকে শুকনা মরিচ ক্রয় করে। তার মাল বুঝে না পাওয়ায় যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সেটা আমার বাজারের কোনো ব্যাপার নয়। আপনি আমার বাজার থেকে গাড়ী নিয়ে আপনার ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে ব্যাবস্থা নিন। আজকের পর আমি আর আমার বাজারে গাড়ী রাখবো না। যখন ড্রাইভার গাড়ী ফেলে পালিয়েছে তার মধ্যে ঘাপলা থাকতে পারে।
এব্যাপারে যশোর ট-১১-০৩২৮ নাম্বার ট্রাকের মালিক খুলনা জেলার খানজাহান আলী উপজেলার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মোড়ল এর মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন আগে ড্রাভারের নিকট ট্রাকটি দিয়েছি। সম্প্রতি বগুড়ার রাজাবাজার এলাকা থেকে নাকি শুকনা মরিচ (ঝাল) নিয়ে রাজবাড়ীর বহরপুর বাজারে আসে। সেখানে চালানের সাথে মালের গরমিল হওয়ায় ট্রাকটি রেখে ড্রাইভারকে ছেড়ে দিয়েছে। আমার কথা হলো মাল যখন গরমিল তখন না নামিয়ে মাল, ট্রাক, ড্রাইভার সহ স্থাণীয় থানায় সোপর্দ করবে। তা না করে ড্রাইভারকে ছেড়ে ট্রাকটি আটক রেখেছে। আমি আমার ড্রাইভার, মরিচের মালিকসহ ট্রান্সপোর্ট এর বিরুদ্ধে খানজাহান আলী থানায় অভিযোগ করেছি। হয়তো আমি আমার গাড়ী ছিনতাই মামলা করবো।
বহরপুর এলাকার কিছু সচেতন মহলের সাথে কথা হলে অনেকেই বলেন, মোঃ আবু বক্কার শেখ দীর্ঘদিন বগুড়ার মহাজনদের সঙ্গে মরিচের ব্যাবসা করে আসছে। সে নিজে কোনদিন গাড়ী ভাড়া করে না। ট্রান্সপোর্টই ভাড়া করে। এবারও তদ্রুপ ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে যশোর ট-১১-০৩২৮ নাম্বারের গাড়ীটি ভাড়া করে দিয়েছে। আর মরিচের মালিকতো সঙ্গে ছিলোনা। তবে ড্রাইভার কি করে মোকাম থেকে মরিচ বুঝে আনলো। আর যদি বুঝে আনলো সেটা কোথায় গেলো। এর দায়তো ব্যাবসায়ীর হতে পারে না। তবে কেন গাড়ীর মালিক উদোর পিন্ডি বুধোর ঘারে চাপাতে চাচ্ছেন?
Tagged with: বহরপুরে মরিচ হারানোয় ট্রাক রেখে সাধারন ব্যাবসায়ী বিপাকে